নিজস্ব প্রতিবেদক ১২:৫৫অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আয়োজিত হাফেজ মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের পর শুরু হওয়া মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ১২ টায়। মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এবারের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা।
মোনাজাত পরিচালনা করছেন তাবলিগ জামাতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা মুহাম্মদ শামীম। মোনাজাতে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিশ্ব উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করা হয়।
মঙ্গলবার ভোর থেকে হাজার হাজার মুসল্লি টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দিকে আসতে শুরু করেন। ময়দানের আশপাশ সড়কগুলোতে কয়েক কিলোমিটার যান চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে তারা আগে-ভাগেই ময়দানে আসতে থাকেন।
এর আগে গতকাল সোমবার বাদ ফজর বয়ান করেন দিল্লির নিজামুদ্দিনের মাওলানা মুরছলিন। বাদ জোহর দিল্লির মাওলানা শেহজাদ ও বাদ আসর মাওলানা শওকত বয়ান করেন। আজ আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ান করেন দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা মুরসালিন উর্দুতে বয়ান করেন। পরে বাংলাদেশের আব্দুল্লাহ মনসুর বাংলায় অনুবাদ করেন। এরপর তালিমের মুয়াল্লিমদের উদ্দেশ্যে উর্দুতে বয়ান করেন দিল্লির মুফতি রিয়াসদ আলী।
গত ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা। মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের আগামী ২০২০ সালের ইজতেমা ১০ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জোবায়ের অনুসারীদের আখেরি মোনাজাতের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়।
এছাড়াও আগামী বছর মাওলানা সা’দ অনুসারীদের ইজতেমার তারিখ পরে ঘোষণা করবেন তাদের আমির মাওলানা সা’দ। সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইজতেমা ময়দানে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সা’দ অনুসারী মাওলানা মো. আশরাফ আলী।
ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লি : দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ থেকে ৩৩৪ মুসল্লি এ পর্বে আসেন। এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, ইজতেমা শেষে এর মালামালগুলো পুলিশ ও প্রশাসনের হেফাজতে থাকবে। পরে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ইজতেমার মালামাল ইজতেমা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ অনুসারী মাওলানা আশরাফ আলী সাংবাদিকদের জানান, এবারের ইজতেমা আদর্শগত ভিন্নতার কারণে ভিন্নভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার কারণে এ ইজতেমায় শ্রোতা ভিন্ন, বক্তা ভিন্ন, দোয়া ভিন্ন আর আদর্শও ভিন্ন। ফলে এটাকে সবদিক থেকে ইজতেমা বলার উপায় নেই। তবে দুটি ইজতেমা একই প্যান্ডেলে হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এটিকে ইজতেমা বলা যায়।
তিনি আরও জানান, মাওলানা সাদের প্রতিনিধি হিসেবে ৩২ জনের একটি জামাত নিজামুদ্দিন দিল্লি থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় এসেছে। তাদের যিনি জিম্মাদার হয়ে এসেছেন মাওলানা শামীম সাহেব তিনিই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা রেজা আরিফ, মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকিল ও সাজিদুর রহমান।
উল্লেখ্য, টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে এ বছর ১৫ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাবলিগ জামাতের পাঁচ দিনব্যাপী ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা। গত ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করেন ঢাকা কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা জোবায়ের অনুসারীগণ। ১৬ ফেব্রুয়ারি জোবায়ের অনুসারীদের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম পর্বের ইজতেমা। পরে গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সাদ অনুসারীদের ইজতেমা গতকাল সোমবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একদিন বাড়ানো হয়। আজ মঙ্গলবার সাদ অনুসারীদের পরিচালনায় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি