সজীব হাসান, আদমদিঘী, (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ০৫ জুন-২০২২,মঙ্গলবার।
কোরবাণীর ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদর হাট সহ ৫টি পশুর হাটে গরু, ছাগল ও ভেড়ার আমদানি বাড়ছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক পশুর হাটে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি, ক্রেতারা সামর্থ্যানুযায়ী পশু কেনার জন্য বিভিন্ন হাট চষে বেড়াচ্ছেন। বিক্রেতারাও কাঙ্খিত দাম পাওয়ার আশায় পশু নিয়ে ছুটচ্ছেন হাটগুলোতে। ফলে পশুর হাটগুলোও বেশ জমে উঠেছে। কোরবানি ঈদ উপলক্ষে আদমদীঘি সদর হাট ও সান্তাহার হাট প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার, নশরতপুর হাট প্রতি শুক্রবার ও সোমবার। সাওইল হাট প্রতি রোববার ও বুধবার এবং বিহিগ্রাম হাট প্রতি সোমবার কোরবানীর হাটে পশু কেনা-বেচা হয়। উপজেলার সান্দিড়া গ্রামের আবদুল হাই সিদ্দিক বলেন, কোরবাণীর পশু পরীক্ষা করার জন্য হাটে সরকারিভাবে বেশি লোক থাকা প্রয়োজন। এবার ভারতীয় গরুর বেশি না থাকায় দেশি গরুর কদর বেড়েছে বেশ। এটিকে সুযোগ নিয়েছেন বিক্রেতারা। দাম হাঁকছেন ইচ্ছে মতো। কিন্তু‘ ক্রেতাও বেশ সচেতন। বিক্রেতাদের হাঁকা দামে তারা সাড়া দিচ্ছেন না। তবে সব দিক বিবেচনায় গতবারের চেয়ে এবার পশুর দাম কম। সুবিধাজনক অবস্থা না থাকলেও ঈদের ৩ দিন আগে থেকে পশু কেনার ধুম পড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রাধাকান্ত হাটে গিয়ে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ঐ হাটে আমদানি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ হাজার গরু-ছাগল। গরুগুলোর সিংহ ভাগই দেশি। হাট ঘোরার সময় দেখা গেল, দমদমা গ্রামের আইনুল হক তার গরুর দাম হাঁকীয়েছেন ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, ক্রেতা মকবুল হোসেন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাম বললেন। কিন্তু গরুর মালিক আইনুল হক বলেন, ঐ দামে গরু বিক্রি করতে আমি নারাজ। কারণ গরুটি বাড়িতে পুষেছি। তিনি জানালেন এর পেছনে তার খরচই হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। গত বছর একই সাইজের গরু তিনি ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। বিভিন্ন হাটে প্রকার ভেদে গরু বেচা-কেনা হচ্ছে ৬০-৮০ হাজার টাকায়। আবাদপুকুর গ্রামের গরুর খামারীর মালিক মকবুল হোসেন বিক্রির জন্য এনেছেন নিজ খামারের কয়েকটি গরু। তিনি জানান আদমদীঘি উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতেই গরু পালন করা হয়। তাই হাটে দেশি গরুর আমদানি বেশি। তার মতে গো-খাদ্যের দাম কমানো গেলে ভবিষ্যতে দেশি গরু দিয়ে কোরবাণীর চাহিদা মেটানো সম্ভব। গরুর দাম বেশি হওয়ার কারণ সর্ম্পকে গরু ব্যবসায়ী রোস্তম আলী বলেন, এবার এমন সময় কোরবাণীর ঈদ এসেছে, যখন কৃষকেরা এখনও ধান রোপন করতে পারেনি। যার কারণে অনেকটা আর্থিক সংকট আছে কৃষকেরা। হাট বারে ক্রেতা গত বারের তুলনায় অনেক কম। ৫ জন বা ৭ জন মিলে কোরবাণীর জন্য গরু কিনছে। এ বিষয়ে সান্তাহার রাধাকান্ত হাটের ইজাদার এস এম আখতারুজ্জামান মিঠু সাথে কথা বললে তিনি জানান, কোরবাণীর ঈদকে কেন্দ্র করে গরু বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জন্য টাকা লেনদেন সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাতে যাতে গরু বেচা-কেনা করা যায় এজন্য লাইটিং, স্যানিটেশন ও গরু রাখার ব্যবস্থ্যা সহ সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় ভাবেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে হাটের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প চালু করেছে।