সুরেশ চন্দ্র রায়, নিজস্ব প্রতিবেদক। ১৭ জুন ২০২২,(শুক্রবার)।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ী শাকরাইল (আয়নালের বাড়ি থেকে ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত) ১ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীনে নির্মাণ হচ্ছে। জনগুরুত্বপ‚র্ণ রাস্তাটির কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন জে এম কনস্ট্রাকশন নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করছেন মহাদেবপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আতোয়ার রহমান কাঙ্গাল।
দেড় কোটি টাকা বাজেটের এই রাস্তাটি বালু মাটি দিয়ে ভরাটের কথা সিডিউলে উল্লেখ থাকলেও ক্ষমতার দাপটে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে ড্রেজিং করা কাদামাটি। পাশাপাশি জোর করে কেটে নেয়া হয়েছে অসহায় এতিম সংখ্যালঘু দু’টি মেয়ের আবাদি জমি। এ মর্মে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে অভিযোগ দেয়ার পরও কর্তৃপক্ষ যেন নির্বাক। ফলে নিয়মবহির্ভ‚তভাবে বীরদর্পে রাস্তার কাজ করে যাচ্ছেন কাঙ্গাল।
এ রাস্তার কাজের শুরুতেই অনিয়ম-দুর্নীতি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, জোর করে রাস্তার পাশের আবাদি জমি বেশি করে কেটে নেয়াসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে রয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা কাঙ্গালের বিরুদ্ধে।
রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত গোপাল চন্দ্র শীল ও মৃত লক্ষী রানী শীলের অসহায় এতিম দুই মেয়ে শ্যামলী রানী শীল ও লিমা রানী শীল লিখিত অভিযোগে বলেন, সাব-কন্ট্রাকটর আতোয়ার রহমান কাঙ্গাল রাস্তার পাশে তাদের সাড়ে ২৩ শতাংশ জমির প্রার ১৫ শতাংশ জমি ভেকু দিয়ে কেটে নিয়ে গেছে। আবার রাস্তার বেশির ভাগ অংশ তাদের জায়গার উপর দিয়ে নিয়েছে। বারংবার নিষেধ করা সত্তে¡ও তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি এই নেতা। ফলে অসহায় মেয়েরা এলজিইডির মানিকগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী, শিবালয় উপজেলা প্রকৌশলী, মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাব ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বরাবর এর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ৮ জুন তারা বিভিন্ন দফতরে সঠিক বিচারের জন্য অভিযোগ দাখিল করেছেন কিন্তু গতকাল পর্যন্ত তারা কোনো সমাধান পাননি।
এ বিষয়ে আতোয়ার রহমান কাঙ্গালের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি মনেপ্রাণে চাচ্ছি রাস্তাটি যেন না হয়। জীবনে অনেক রাস্তা করেছি, এ রাস্তা না হলে আমার কিছুই আসবে যাবেনা। ভালো বালু অন্য স্থান থেকে এনে রাস্তা করার কথা থাকলেও আপনি কেন পাশ থেকে ড্রেজিং করে কাদামাটি ফেলছেন- প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, যেখান থেকেই আনি, রাস্তায় তো হচ্ছে।এতিম মেয়েদের জায়গা কেটে নেয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সময় হলে তাদের জায়গা ভরাট করে দেয়া হবে।
শিবালয় উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন জানান, আমরা রাস্তায় গিয়ে দেখেছি বালুর পরিবর্তে কাদামাটি ফেলা হয়েছে। কাদামাটি রাস্তা থেকে উঠিয়ে ফেলে বালু দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং এ কাজের সাব-ঠিকাদার আতোয়ার রহমান কাঙ্গালকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
মানিকগঞ্জের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল হক বলেন, আমরা কোনো অনিয়ম মেনে নেবো না। অবশ্যই এতিম মেয়েদের জায়গা ভরাট করে দেয়া হবে। উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখার জন্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি। মূল ঠিকাদারের সাথেও আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি।