কালের কাগজ ডেস্ক:০৭ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার ।
টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। দলটির এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে অনেকটা জোড় দিয়েই বলা হচ্ছিল যে, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এবারের নির্বাচনে লড়ছে তারা। অতীত উন্নয়ন ও সাফল্যের উপহারস্বরূপ জনগণও শেখ হাসিনাকে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। নতুন সরকার গঠনের মাস না পেরোতেই সুসংবাদ পেলো জাতি। যেখানে বলা হচ্ছে, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কমছে দারিদ্র্যতার হার।
সম্প্রতি প্রকাশিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে দেশে দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। প্রতিবেদনের বিষয়টি রোববার বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে তৈরিকৃত প্রতিবেদন ২০১৮ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে দারিদ্রসীমার নিচে বাস করত ২৪.৩ শতাংশ মানুষ, ২০১৭ সালে দারিদ্রের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৩.১ শতাংশে। ২০১৫ সালে অতিদরিদ্র মানুষ ছিল ১২.৯ শতাংশ, ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১২.১ শতাংশে।
এসডিজির মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেগুলোও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে অনেকগুলো ক্ষেত্রেই বেশ উন্নতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
সাধারণত এসডিজির বড় লক্ষ্য অর্জনে ব্যক্তিখাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু ক্ষেত্রে তথ্যের অভাব রয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই, কিছু ক্ষেত্রে একেবারেই তথ্য নেই। সারাদেশে এসডিজি অর্জনের তথ্য পেতে পরিসংখ্যানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ‘এসডিজির বড় লক্ষ্য অর্জনে ব্যক্তিখাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। দেশে ইন্টারনেটের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বিদ্যুতের উন্নতি অভাবনীয়। বিদ্যুতের সফলতা আমরা ভোটের মাঠে পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু ও গড় আয়ু বেড়েছে। সার্বিক উন্নয়নের সুফল হিসেবেই এ অর্জন। মাথাপিছু আয়ে আমরা ভারত ও চীনের সমান, এটা গর্বের বিষয়।
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এমডিজি অর্জনে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় ব্যয় বাড়ছে। তবে ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বাড়ছে না। এরপরেও আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের উন্নতি উৎসাহব্যঞ্জক। পুষ্টি উন্নয়নে আরও গুরুত্ব দিতে হবে, উৎপাদনের উৎকর্ষ, ব্যয় কমানোয় গুরুত্ব দিতে হবে। গুণগত শিক্ষার উন্নয়ন দরকার।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, ‘এসডিজি অর্জন সবখাতে সমান নয়; বিশেষ করে শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে। সমতার ক্ষেত্রে এসডিজিতে ফোকাস করা হয়নি। শিক্ষা ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সিপ্পো বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের চলমান কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে।