Logo
ব্রেকিং :
ঘিওর ও শিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা সিংগাইরে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় ডিবি পুলিশের এসআই সহ ৬ জন আহত । হেরোইন সহ ২ জন গ্রেফতার ফরিদপুরের নগরকান্দায় নির্মানকালে ভেঙ্গে পড়লো ব্রীজ আদমদীঘিতে দুই মাদক সেবির তিন মাসের কারাদণ্ড বগুড়া আদমদীঘিতে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু নেত্রকোনায় ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের মতবিনিময় সভা নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসনের ভিডিও কনফারেন্স মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)র অভিযানে হেরোইন ও ইয়াবাসহ ২জন গ্রেফতার দৌলতপুরে স্বাধীনতা দিবসে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় পিআইওসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

গোয়ালন্দে ‘অপরিকল্পিত’ খাল খনন করায় এলজিইডির পাকা রাস্তা ধসে খালে

রিপোর্টার / ২৩ বার
আপডেট শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০

আবুল হোসেন, গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) প্রতিনিধি ঃ০৭ মার্চ-২০২০,শনিবার।

অপরিকল্পিত খান খননের কারণে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চর আন্ধারমানিক রেল লাইন-চরকৃষ্ণপুর থেকে সেলিম ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত এক বছর আগে নির্মিত এলজিইডির পাকা সড়কের ২০০ মিটারের বেশি অংশ পাশের খালে ধসে গেছে। প্রায় তিন মাস ধরে তিন চাকার যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে যে কোন মুহুর্তে পায়ে চলার পথও বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে গোয়ালন্দের ছোটভাকলা ইউনিয়নের চর আন্ধারমানিক রেল লাইন-চর কৃষ্ণপুর হয়ে সেলিম ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত চেইনেজ ১০০০ মিটার থেকে ১৬৩৫ মিটার পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। ৪০ লাখ টাকা ব্যায়ে সড়কের পাকা কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করার পর গত বছর ১২ মে পোস্টওয়ার্ক গ্রহণ পূর্বক চূড়ান্ত বিল প্রেরণ করে। রাস্তার দুই পাশে মাটির কাজ শেষে দৃশ্যমান সুন্দর করে সম্পন্ন করা হয়। রাস্তার চেঃ ১৩৫০ থেকে ১৫৫০ মিটার পর্যন্ত অংশের বাম পাশর্^ দিয়ে পদ্মা নদীর শাখা খাল প্রবাহিত হয়েছে। গত বর্ষার আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই শাখা নদীতে গভীর করে খাল পুনঃখনন করে। অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা ঘেষে খাল পুনঃখনন করায় ভরা বর্ষায় খালটি দিয়ে পানির তীব্র ¯্রােত বয়ে যায়। এতে রাস্তার ১৩৫০ থেকে ১৫৫০ মিটার অংশের বাম পাশের পেভমেন্টসহ ভেঙ্গে নীচে ধসে পড়ে।
এরপরও কাজ না হওয়ায় পরবর্তী যোগদানকারী গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকশৌলী মো. বজলুর রহমান খান চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারী পূনরায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করে পত্র দেন। নির্বাহী প্রকৌশলী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২১ জানুয়ারী রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে পত্র লিখেন।
সরেজমিন দেখা যায়, এলজিইডি কার্পেটিংয়ের রাস্তাটি ছোটভাকলা ইউনিয়নের মাহমুদপুর, চর কৃষ্ণপট্রি ও চর আন্ধারমানিক তিনটি মৌজার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদীর শাখা খাল। রাস্তাটির বয়স এক বছর পার না হতেই পাশের খালে ধসে গেছে। রাস্তার ২০০ মিটারের বেশি অংশ খালে ধসে গেছে। রাস্তার পাশে রোপন করা বেশ কিছু গাছ মাটিসহ ধসে গেছে। খালের বিপরিত পাশে স্থানীয়দের চাষাবাদকৃত জমি। সে জমি খালের ভিতর ধসে পড়েছে। এসময় এলাকার লোকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে।
মাহমুদপুর এলাকার মুদি দোকানী রোস্তুম মোল্লা (৭০) বলেন, গত বন্যার কিছুদিন আগে রাস্তার পাশের খাল খনন করে। প্রায় ৭ফুট করে গভীর ও ৩০ ফুট করে প্রসস্থ্য করায় বর্ষায় পানির প্রবাহ বেড়ে যায়। বর্ষার পানি কমতে শুরু করায় ধীরে ধীরে পাকা রাস্তার পাড় ধসে পড়তে থাকে। এভাবে খালের দুই পাড়ের মাটি ধসে পড়ায় রাস্তা ভেঙ্গে যেতে থাকে।

স্থানীয় বরাট ভাকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুপা আক্তার ওলিয়ারসহ কয়েকজন জানায়, তারা রাস্তাটি দিয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে। আগে প্রতিদিন ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, মাহেন্দ্র, রিক্সা, ভ্যান এমনকি ছোট ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়মিত চলাচল করতো। স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী তিন চাকার গাড়িতে আসা যাওয়া করতো। পাকা রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ খালে ধসে পড়ায় এখন তিন চাকার গাড়ি আসা যাওয়া করেনা। তাদেরকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পথ হেটে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।
রাস্তার পাশেই সরকারিভাবে ঘর বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করছেন বিধবা বৃদ্ধা ছামিরুননেছা (৭০) বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় স্বামী গোলাগুলিতে মারা যান। এরপর চার মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করেছেন। মানুষের কাছ থেকে ধার-কর্জ করে নিজের সহায় সম্বল বিক্রি করে মেয়েদের বিয়ে দেন। থাকার জায়গা না থাকায় গত বছর সরকারিভাবে ঘর বরাদ্দ পান। রাস্তার বেশির ভাগ ভাঙনে খালে যাওয়ায় নিজের ঘর রক্ষা করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তাদের মতো স্থানীয় গৌড় কিত্তনিয়া, স্কুল শিক্ষার্থী নাইম শেখসহ অনেকেই অপরিকল্পিতভাবে খান খননের ফলে পাকা কার্পেটিং করা সড়ক খালে ধসে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, গত বর্ষার আগে পাউবোর খাল খননের পর সড়কের পাশ ধসে পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে মাটিসহ পাকা কার্পেটিং সড়ক ধসে এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছে। ফলে গত তিন-চার মাস ধরে তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে একাধিকবার পাউবোকে অবগত করেছি। দ্রুত মেরামত করা সম্ভব না হলে রাস্তাটি দিয়ে পথচারীদেরও চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের খাল খনন প্রকল্পের আওতায় পাউবো খাল পুনঃখনন করেছে। এলজিইডির প্রকৌশলীর মাধ্যমে পাউবোকে অবগত করে প্রাথমিকভাবে মাটি ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা ঠিক রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফ সরকার বলেন, রাস্তার অনেকটা খালের জায়গার মধ্যে। এ বিষয়ে বিতর্কে না জড়িয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট খাল পুনঃখনন প্রকল্পের ঠিকাদারের সাথে আলাপ করে রাস্তার ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পাইলিং করে মেরামতের ব্যবস্থা নিচ্ছি। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে মনে করছি।


এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com