আবুল হোসেন,রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:০৭ নভেম্বর-২০২২,সোমবার।
পদ্মা নদীর ধুধু সাদা বালু চর এখন সবজি ক্ষেতে ভরে গেছে। যেখানে বালু চর ছিলো এখন সেখানে সবুজ মাঠে ফসলের হাসি। বছরে ৯ মাস নানা কৃষি শষ্যের ফলন ফলছে চরে।
শীতের সবজি, ধান সহ নতুন কৃষি ফসল চাষের মাধ্যমে চর অঞ্চলের কৃষকের স্বচ্ছলতা এসেছে। দূর্গম চরে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। অনেক অনাবাদি জমি এসেছে চাষের আওতায়। কৃষির উপর নির্ভর করে স্বপ্ন দেখেছেন নদী ভাঙ্গনের শিকার অনেক কৃষক।
জানাযায়, প্রায় ৪০ বছর আগে নদী ভাঙ্গনে গোয়ালন্দ উপজেলার চর কর্ণেশন, মহিদাপুর, মজলিসপুর, কন্ঠাদিয়া মৌজা নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন পানি আর বালুতে হাবুডূবু খেয়ে প্রায় দশ বছর আগে চাষাবাদের উপযোগী হয়ে উঠে চর। কৃষক কাশফুলের বাতান ভেঙে চাষাবাদের উপযোগী করে গড়ে তুলেন। ধীরে ধীরে চাষাবাদ শুরু হয় বালু চরে। এখন সেই বালু চর যেনো সবুজের মাঠ। চরে ফুটে উঠেছে ফসলের হাসি।
সরেজমিনে দেখাযায় চর কর্ণেশন মাঠে টমেটো চারা গাছে পরিচর্যা করছে কৃষক ছালাম মোল্লা, তিনি বলেন চার বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছি। চারা গাছে ফুল দেখা দিয়েছে। গাছে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্প্রে করে ঔষধ ও গোড়ায় সার দিচ্ছি। নতুন মাটি হওয়ায় গত বছর টমেটোর ভালো ফলন হয়েছিলো। দামও ভালো পেয়েছিলাম। তাই এবারও টমেটো চাষ করেছি। তিনি আরো বলেন জমি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে পূনরায় জেগে উঠার পর খাজনা বন্ধ রয়েছে। খাজনা বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে অনেক প্রভাবশালী ব্যাক্তি অনেকের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে চাষাবাদ করছে। এসএ,আরএস খতিয়ান ভূক্ত প্রকৃত জমির মালিকানা যাচাই বাছাই করে খাজনা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মহিদাপুর চরে স্বামীর সাথে কৃষি কাজ করছে কৃষাণী ফরিদা বেগম বলেন, জমিতে দু ফসলি সবজি চাষ করেছি। মিষ্টি কুমড়া ও ধনিয়া পাতা। এখন মাঠ থেকে ধনিয়া পাতা গাছ উত্তোলন করে বিক্রি করছি। মাঠে মিষ্টি কুমড়া গাছ থাকবে। পরে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করবো। চরে যাতায়াতের রাস্তা ভালো না থাকায় ফসল নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
হেলাল শেখ বলেন, আমাদের জমির খাজনা বন্ধ রয়েছে। এসএ, এবং আরএস রেকর্ড অনুযায়ী জমির মালিকা সূত্রে জমি দখল করে চাষাবাদ করছি। কিন্তুু অবৈধ ভাবে কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি জোর পূর্বক জমি দখল করে চাষাবাদ করছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো আশরাফুর রহমান বলেন, চরের জমি নদী ভাঙ্গনের ফলে বিএস রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। পুনরায় চর জেগে উঠলে নতুন করে খাজনা নেওয়ার জন্য প্রকৃত জমির মালিকানা যাচাই বাছাই করে খাজনা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জোর পূর্বক জমি দখল করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।