রামপ্রসাদ সরকার দীপু ,স্টাফ রিপোর্টার :০৩ অক্টোবর-২০২৩,মঙ্গলবার।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের করজোনা বাজার থেকে নয়াচর-ভররা- ভায়া হিজুলিয়া খালপাড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিনেও মেরামত করা হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে চলাচলরত ১৬টি গ্রামের হাজার হাজার জনগনের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদেও চাল,ডাল আটা সহ নৃত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ২/৩ গুণ অর্থ অপচয় করতে
হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর ঘিওর হিজুলিয়া ভররা রাস্তাটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তরের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ন মেরামত করা হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা নেয়ার কাজে মারাত্মক দুর্ভোগের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তাজুড়ে পানি -কাদায় একাকার হয়ে যায়। করজোনা, শ্রীবাড়ি, বড়টিয়া, দক্ষিণ করজোনা, আগুনপুর, নয়াচড়, হিজুলিয়া জগন্নাথদিয়া, গোয়ালজান, খাসকামারখালী, বাথন্ড, নেগীরকান্দি, বহলাকোল, রাহাতহাটি, পাশের উপজেলার ভররা, বনগ্রাম, বারাদিয়া, পেড়াসহ ১৬টি গ্রামের মানুষজন চলাচল করেন এই রাস্তায়। এছাড়া করজনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, করজোনা উচ্চ বিদ্যালয়, হিজুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াচর প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, তিনটি মসজিদ, দুটি মন্দির। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রায়ই কর্দমাক্ত রাস্তায় পা পিছলে পড়ে আহত হয়। বৃষ্টি হলে তাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে। বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরো বেশি পোহাতে হয় এলাকাবাসীর। করজোনা গ্রামের শিক্ষক সঞ্জীব বর্ধন
বলেন, একটু বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তায় কাঁদাপানি জমে থাকে। সামনের মন্দিরে উপাসনা অথবা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেও কাঁদা পানি পেরিয়ে যেতে হয়, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই রাস্তার দূর্ভোগের কারনে কোনো রোগী সময় মতো হাসপাতালে নেওয়া যায়না। এপর্যন্ত বেশ কয়েকজন অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে। নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, রাস্তাটি মেরামতের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবুল ট্রেডার্স। কিন্তু তারা ১১ বছরেও কাজ শুরু করেনি। গোয়ালজান গ্রামের প্রবীণ সামেলা বেগম বলেন আমাদের ঘিওর উপজেলা সদরে
বিভিন্ন কাজ করতে হয়। কিন্তু রাস্তার কারনে আমাদের মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। ভ্যান চালক সামছু মিয়া বললেন, এই কাদার মধ্যে একবার আটকে গেলে কেউ সাহায্য করতে চায় না। যে আসে সেও কাদায় মেখে যায়। বাড়ি থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ভ্যান রাখি। করজোনা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোজ কান্তি রায়, পশু চিকিৎসক পিয়ার আলী, ইউপি সদস্য আলমগীম হোসেন, প্রবীণ কৃষক ওমর আলিসহ শতাধিক ব্যক্তি জানান, বৃষ্টি হলে রাস্তায় পা রাখা যায় না। কোন জরুরী কাজে আমরা ঘিওর বাজারে যেতে পারিনা। বড়টিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শামসুল আলম মোল্লা রওশন বলেন, রাস্তা এলজিইডির জেলা প্রকল্পের তালিকায় দেওয়া হয়েছে। যেহেতু রাস্তাটি জেলা পরিষদের মাধমে হয়েছে তাই আমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাছেও বলেছি। তারা দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের ব্যবস্থা করবেন। হিজুলিয়া গ্রামের অধিবাসী বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমাদো এই রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভেঙ্গে গেছে। সকল প্রকার যানবাহন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজনের যাতায়াতে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। জরুরিভাবে রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জেলা প্রজেক্টে অনেকগুলো কাজের তালিকা তৈরী হচ্ছে। এ রাস্তাটার যদি আইডিভুক্ত থাকে, তাহলে সেই তালিকায় দিয়ে কাজটি করতে পারবো। আর আমাদের আইডি থাকলে আমরা যেকোনো একটি প্রজেক্টে দিয়ে দিব
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার দুর্ভোগের কথা শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তদেও অবগত করবো।