কালের কাগজ ডেস্ক:০৫ ফেব্রুয়ারি,মঙ্গলবার।
দুদক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, সরকারের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে। দুদকের রাজনৈতিক ভূমিকা ও অন্যায় বিচারের কারণে নির্দোষ জাহালম তিন বছর কারাগারে সাজাভোগ করেছে। মিথ্যা আসামি বানিয়ে নির্দোষ যুবক জাহালমের কারাভোগ মূলত দেশের অপরাধমূলক প্রশাসনেরই ছবি। এ ঘটনায় দুদকের ভূমিকা ন্যক্কারজনক বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের মেশিনে পরিণত হয়েছে। দলটির অভিযোগ, দুদকই সরকারের নির্দেশে মিথ্যা মামলা করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করেছে।
রিজভী বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার এক হাজার ৯২ দিন পর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম। নির্দোষ জাহালম এতদিন কারাগারে ছিলেন শুধু আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা আশ্রিত দুদকের রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে।
তিনি বলেন, বর্তমান দুদকে আসীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। সে জন্য দুদক বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করতে গিয়ে বেপরোয়া অনাচারে লিপ্ত থেকে মনুষ্যত্বহীনতার ডালপালা বিস্তার করেছে। আর এতে নির্দোষ, নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষও তাদের করা মিথ্যা মামলার অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
দুদক উগ্রতা নিয়ে কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভুয়া ভোটের সরকারের চাহিদা মেটাতে, গণতান্ত্রিক শক্তিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি করতে দুদক বর্তমানে উগ্রতা নিয়ে কাজ করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মীসহ নির্দোষ, নিরীহ যুবক জাহালম- সবাই একই রকম নির্বিচার মামলার ধারাবাহিকতাতেই কারাগারে আটক। তারা সবাই দুদকের উগ্রতার নির্মম শিকার।
রিজভী দাবি করেন, এই দুদকের কারণেই আশকারা পেয়ে আজ দেশে ‘ক্রিমিনাল ইকোনমি’ পত্রপল্লবে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। জাহালমের দীর্ঘদিন কারাভোগের ঘটনায় দুদকের ভূমিকা নজিরবিহীন ও ন্যক্কারজনক। এ ঘটনায় দেশে একটি ‘ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে’র ছবিই ভেসে ওঠে। দুদক সরকারের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে।
তিনি বলেন, এই দুদক আইনি নিয়মকানুন কিছুই না মেনে আওয়ামী সরকারের শীর্ষ ব্যক্তির নির্দেশেই দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রীকে আটকে রাখতে মামলা সাজিয়েছে। বিরোধী শক্তিকে দমন করতে আওয়ামী অবৈধ গোষ্ঠীর একটি হাতিয়ার হলো বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক সরকারের ১০ বছরের মেগা দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারেনি অভিযোগ করে রিজভী বলেন, যদি করতেই পারত, তবে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও নেতা- যাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, তারা আজকে প্রবল প্রতাপে দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াতে পারত না। দেশের বাইরে বেগমপল্লী ও সেকেন্ড হোম গড়ে উঠত না। নিউইয়র্কে মন্ত্রীপুত্রের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থাকত না। সাবেক অর্থমন্ত্রী চার হাজার কোটি টাকা চুরিকে দুর্নীতি বলতে নারাজ হতেন না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার, নজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি