মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল থেকে ঃ০৫ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার।
বিনা অপরাধে কাটানো হলো প্রায় তিন বছর কারাবাস। তিন বছর পর জাহালমকে কাছে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত হলোও কষ্টের শেষ নেই পরিবারের। বিগত তিন বছর বাড়ী বাড়ী কাজ করে সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলেকে কারাগাড় থেকে মুক্ত করার জন্য কতই না মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে তার পরিবার। অন্যের কাছ থেকে সুদে টাকা এনে ছেলের জন্য খরচ করলেও এ টাকা কি করে শোধ করবে এটাই এখন চিন্তার বিষয়। এখন চলার মত পরিবারে আর কিছু নেই, জাহালমের পরিবারটি এখন নিঃস্ব।
জাহালমের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার তিন মেয়ে তিন ছেলে জাহালম আমার মেঝ ছেলে। সে লেখাপড়া জানেনা সে কিভাবে এত টাকা আতœসাৎ করবে, আমার ছেলে বিনা অপরাধে তিন বছর জেল খাটছে। মনোয়ারা বেগম কান্নাকষ্ঠে আরো বলেন, আমার ছেলের এতো বড় ক্ষতি কেন করলো ওরা। আমি তাদের শাস্তি চাই ,অনেক দেরি করে হলোও আমার ছেলে আমার কাছে ফিরে এসেছে আমি এতে অনেক আনন্দিত। কিন্তু বিনা অপরাধে যে শাস্তি আমার ছেলে ভোগ করেছে এর বিচার চাই। আজ আমরা নিঃস্ব আমাদের থাকার ঘর ছাড়া আরতো কিছুই নেই। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন পাওনাদাররা বাড়ী আসে তাদের টাকা ফিরত নেয়ার জন্য। আমরা তো সব কিছু হারিয়েছি এখন ক্ষতিপূরন কে দিবে। সরকারের কাছে আমরা সহায়তার জোর দাবি জানাই। দীর্ঘ ৩ বছর কারাভোগের পর অবশেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছে জাহালম মিয়া (৩০)। রোববার রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পায়। খোজ নিয়ে জানা যায়, আবু ছালেকের বিরুদ্ধে সোনালি ব্যাংকে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটেন জাহালম। জাহালম নিরাপরাধ প্রমান হয়। তদন্ত করে একই মত দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুদকের দায়ের করা অর্থ জালিয়াতি মামলায় ভূলবশত তাকে গ্রেফতার করে। জাহালম টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে। সে তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। স্ত্রী কল্পনা ও সাত বছর বয়সী চাদনী নামের এক কন্যা নিয়ে তাদের ছিল ছোট্র সংসার। জাহালম বলেন,আমার মা অন্যের বাড়ি কাজ করে আমার মুক্তির জন্য দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়েছে। আমি এর ক্ষতিপূরন চাই। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করি। মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আর কোন মায়ের সন্তান এভাবে যেন বিনা দোষে জেলে না যায় এ জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন তিনি।
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি