মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল থেকে ঃ১৬ জানুয়ারী,বুধবার ।
টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বহেরাতৈল গ্রামে সকল প্রকার নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে ফসলি জমি, বনজসম্পদ নষ্ট ও ঘন বসতি এলাকায় ইটের ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। অপরিকল্পিত ইটভাটা নির্মাণের ফলে পরিবেশের উপর মারাত্বক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন (২০১৩) অনুযায়ী,ঘন-বসতি এলাকা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাট বাজার থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার এবং গ্রামীণ বা ইউনিয়ন পরিষদ রাস্তা থেকে অন্তত অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ সখিপুরে বহেরাতৈল গ্রামের ভাটা মেসার্স সবুজ ব্রিকস্ এবং পূবালী ব্রিকস্ এই দু’টি ভাটা সব ধরণের নিয়ম ভঙ্গ করে স্থাপন করা হয়েছে।
ভাটা সংলগ্ন এলাকায় আছে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,দু’টি বাজার,ঘন-বসতি বাড়ি ও বনজসম্পদ এছাড়া ৫০ গজের মধ্যেই রয়েছে গ্রামীণ সড়ক। সেই রাস্তা দিয়ে তিন টনের অধিক মালামাল বহনকারী যানবাহন চলাচল করছে। যা ইটভাটা আইন নীতিমালার পরিপন্থী।
এছাড়া,সকল প্রকার সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে মেসার্স সবুজ ব্রিকস্ এবং পূবালী ব্রিকস্ নামের দু’টি ভাটা নির্মাণ কাজ শেষ করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইট বানানোর কাজও চলছে পুরোদমে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাটার মালিককে না পেয়ে ভাটার ম্যানেজার জামাল উদ্দিন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ইট ভাটা অনুমোদিত আছে, সব কাগজ পত্র মালিক সাহেবের কাছে তার বাসায় এলেঙ্গাতে। পরে তিনি কথা ঘুরিয়ে আবার বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরে আমরা আবেদন করেছি ভাটা নির্মাণের অনুমতির জন্য। এখনও অনুমতি পাইনি।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর অভিযোগ,এখানে ইটভাটার কাজ শুরু হওয়ার কারণে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। ধোঁয়ার কারণে স্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। গাছে কোন ধরণেন ফল আসে না। আমরা ফল খেতে পারি না, পাখির কোলাহল নেই, রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে অনেক অসুবিধা হয়। ইট বোজাই ট্রাক রাস্তা দিয়ে যেয়ে রাস্তা নষ্ট করে ফেলেছে। এছাড়া ধুলো-বালি ও ধোয়ার কারণে বাড়ি ঘরেও মানুষ বসবাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে ভাটার ইট নির্মাণ কাজ বন্ধ করা দাবি জানাচ্ছি।
কথা হয়,পরিবেশ অধিদপ্তর (পরিদর্শক) সজীব কুমার ঘোষের সাথে তিনি বলেন, আমাদের তালিকা মতে সখিপুরে ৮টি ইট-ভাটা আছে। তার মধ্যে ৩টির ছাড় পত্র আছে ৫টির ছাড় পত্র নেই। এরা আদালতে রিট করে পরিচালনা করে আসছেন। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের করার কিছু থাকে না। তারপরেও আমরা যাচাই-বাছাই করে এর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থ নেয়া যায় দেখছি। অপরিকল্পিত ইট ভাটা জনদূর্ভোগের সৃষ্টি হলে এদের বিরুদ্ধে অবশ্য্ই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি