Logo
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

টাঙ্গাইলের সখীপুরে করোনা সন্দেহে মাকে বনে ফেলে গেলেন সন্তানেরা!

রিপোর্টার / ২৮ বার
আপডেট মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০

মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ঃ১৪ এপ্রিল-২০২০,মঙ্গলবার।
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বনে ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা মাকে গতকাল সোমবার রাতে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মা, তুমি এই বনে এক রাত থাকো। কাল এসে তোমাকে নিয়ে যাব’ এ কথা বলে ৫০ বছর বয়সী মাকে শাল-গজারির বনে ফেলে যান তাঁর সন্তানেরা। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে সন্তানেরা এমনটা করেন। পরে খবর পেয়ে রাত দেড়টার দিকে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে বন থেকে উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠায়।

উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোমবার রাত আটটার দিকে বনের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা আমাকে খবর দেয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন নিয়ে ওই নারীর কাছে যাই। পরে ওই নারী তাঁর ছেলেমেয়েরা কীভাবে তাঁকে জঙ্গলে ফেলে গেছেন, সেই কাহিনি বলেন। উপায়ন্তর না দেখে রাত ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) খবর দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে ওই নারীকে উদ্ধারের পর অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে ভর্তি না করায় মঙ্গলবার সকাল সাতটায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়।’

সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীনুর আলম প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন, তিনি জানান ওই নারীর জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি ও কাশি আছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ থাকায় ওই নারীকে রাতেই কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তি সুযোগ না পাওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেলের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। আজ ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।

ইউএনও আসমাউল হুসনা লিজা এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ থাকায় ওই নারীর এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতারা মিলে তাঁকে বনে রেখে গ্রামে চলে যান। কীভাবে সন্তানেরা মায়ের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ করলেন? গ্রামবাসী খোঁজ না পেলে রাতের বেলা হয়তো ওই অসুস্থ নারীকে শিয়াল কুকুরে খেয়ে ফেলত।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ওই নারীর বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়। গাজীপুরের সালনায় একটি পোশাক কারখানায় ওই নারীর এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতারা চাকরি করেন। সবাই মিলে সালনায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ওই নারী সবাইকে রান্না করে খাওয়াতেন। কয়েক দিন ধরে ওই নারীর জ্বর, সর্দি, কাশি শুরু হলে আশপাশের বাসার লোকজন তাঁদের তাড়িয়ে দেন। একটি পিকআপভ্যান ভাড়া করে শেরপুরের নালিতাবাড়ী যাওয়ার পথে সখীপুরের জঙ্গলে সন্তানেরা মাকে ফেলে যান।


এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com