টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ২২ এপ্রিল ২০১৯,সোমবার।
টাঙ্গাইলের পাকিস্তানি কিশোরী ধর্ষণ ঘটনার প্রধান আসামি আল-আমিনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
উল্টো আসামির পরিবার ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার মাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুমকি-ধমকি নিয়েই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে দিন কাটাচ্ছেন ওই কিশোরী ও তার মা। এমনকি ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আল-আমিন তাদের পাকিস্তানি পাসপোর্টও ছিনিয়ে নিয়েছে।
এ ঘটনায় তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওই কিশোরী ও তার মা।
এদিকে সোমবার দুপুরে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ওই কিশোরী ও তার মাকে দেখতে যান। তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। যথাযথ চিকিৎসা, আইনি সহায়তা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দেন।
গোপালপুর উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর আনুমানিক ২০ বছর আগে পাকিস্তানের করাচিতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন। তাদের নবম শ্রেণিতে পড়–য়া এক মেয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বামীকে পাকিস্তানে রেখেই পাঁচ মাস আগে ছয় মাসের ভিসায় কিশোরী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গোপালপুরে আসেন তিনি। ওঠেন উত্তর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ভাসুর আবদুল ওয়াদুদের বাড়িতে। সেখানে তার মেয়ের ওপর চোখ পড়ে আরেক ভাসুর আবুল হোসেনের ছেলে আল-আমিনের। ওই কিশোরীকে মাঝে মাঝেই উত্ত্যক্ত করত সে। বেশ কয়েকবার শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করে। তখন পারিবারিকভাবে বিষয়টি ফয়সালার চেষ্টা হয়।
এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মা ও মেয়ের পাকিস্তানে ফেরত যাবার খবর শুনে আল-আমিন ক্ষুব্ধ হয়। গত ১৬ এপ্রিল রাতে একদল সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে চাচার বাড়ি থেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায় সে। এরপর বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তার ওপর জোরপূর্বক পাশবিক নির্যাতন করে।
এ ঘটনায় গত ১৭ এপ্রিল আল-আমিন, তার বাবা আবুল হোসেন ও মা আনোয়ার বেগমকে আসামি করে ওই কিশোরীর মা গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
গোপালপুর থানা পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ১৮ এপ্রিল ভোরে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার মহিষাকান্দি মোড়ের এক বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে।
গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল-মামুন জানান, মামলা দায়েরের পর আসামি আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বাংলা বলতে না পারায় এবং দোভাষী না মেলায় ওই কিশোরীর ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। পুলিশি নিরাপত্তায় তার যথাযথ চিকিৎসা চলছে।
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি