টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:১৭ ডিসেম্বর,সোমবার ।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও অনশনরত টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন।
অনশনের দ্বিতীয় দিন সোমবার(১৭ ডিসেম্বর) সকালে রিটার্নিং অফিসারের কাছে দেয়া লিখিত ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘আমার অনশন ধর্মঘটের ১৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত কিন্তু কোন প্রতিকার না পেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একই সঙ্গে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার’। ঘোষণায় তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার যদি কোন ক্ষতি হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে বলে ঘোষণা দিচ্ছি’।
রোববার(১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল-বল্লভবাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খানের কর্মী-সমর্থকরা হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত গাড়িসহ চারটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিবাদে রোববার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে এসে তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। দাবিগুলো হচ্ছে, কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও সরকার দলীয় প্রার্থীর নির্বাচন পর্যন্ত আর কোন সহিংসতামূলক কার্যকলাপ করবে না মর্মে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মুচলেকা প্রদান।
আমরণ অনশন ঘোষণার পর সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে তাঁর স্বাস্থ পরীক্ষা করা হয়েছে। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ হোসেন খান বলেন, লতিফ সিদ্দিকী সাহেব উচ্চ রক্তচাপে ভূগছেন, তিনি ওষুধও খাচ্ছেন না। খাবার না খাওয়ায় ধীরে ধীরে তাঁর শরীরের সুগার কমে যাচ্ছে। এতে শরীর নিস্তেজ হয়ে শারীরিক ঝুঁকি বাড়ছে।
এর আগে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ও নিকটাত্মীয়রা তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দেখতে যান।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন এবং সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম তার সাথে দেখা করতে এলে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমার অনশন প্রতিবাদ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নয়, সরকারের বিরুদ্ধে নয়, স্থানীয় সাংসদের সহিংসতামূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি শেখ হাসিনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইনা, আমি সরকারকে বিব্রত করতে চাইনা। আমি চাই- সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন। আমি যদি শেখ হাসিনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইতাম, তাহলে আমি এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এই অবস্থান ধর্মঘট করতাম। তাহলে কি হত? যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। আমি তা চাই নাই। আমি জনগণের জন্য রাজনীতি করি। আমি জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলতে চাই না। আমি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। দাবি মানা হলে কাউকে বলতে হবেনা নিজেই চলে যাব, যতক্ষণ মানা না হবে ততক্ষণ কোথাও যাব না।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি