Logo
ব্রেকিং :
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী সভায় সাধারণ সম্পাদকের হাতে সাংগঠনিক সম্পাদকে লাঞ্ছিত নগরকান্দায় জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ -২০২৩ ১ম রাউন্ডের খেলা অনুষ্ঠিত  ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে নৌকা মনোনীত প্রার্থী’র সাথে রাণীশংকৈল আ’লীগের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  নেত্রকোনায় আমন চাল সংগ্রহ অভিযান নেত্রকোনায় ইমামদের চেক বিতরন বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত নেবো কিভাবে নৌকার প্রার্থীকে বিজয় করা যায় – টাঙ্গাইলে কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইল জেলা মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি মেনন, সম্পাদক ডা. স্বপন দৌলতপুরে মানিকগঞ্জ-১আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম জাহিদ এর শুভেচ্ছা বিনিময় দৌলতপুরে মানিকগঞ্জ-১আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম জাহিদ এর শুভেচ্ছা বিনিময় নগরকান্দায় আমন ধান সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন 
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

টাঙ্গাইলে ৩২ ইঞ্চি উচ্চতার শাহিদা প্রতিষ্ঠিত হতে চান

রিপোর্টার / ৭৭ বার
আপডেট বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২

মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:১৯ অক্টোবর-২০২২,বুধবার।

উচ্চতা পৌঁনে তিন ফুট, অথাৎ ৩২ ইঞ্চি। দেখতে ছোট্ট বালিকার মতো হলেও বয়স ১৮ পেরিয়েছে। আট-দশটা ছেলে মেয়ের মতোই চলাচল করে শাহিদা আক্তার। জন্ম থেকে গ্রোথ হরমোনজনিত (সোমাটোট্রপিন) জটিলতার কারণে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা হয়নি তার। এই শারীরিক গঠন নিয়ে প্রথম অবস্থায় সহপাঠী, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে নানা কটূ কথা। তবে এসবের কিছুই তাকে দমাতে পারেনি। কৃতিত্বের সঙ্গে পেরিয়েছেন পিএসসি ও জিএসসির গন্ডি। এখন এসএসসি শেষ করে ভালো কলেজে পড়ার স্বপ্ন তার চোখে মুখে। তার বর্তমান বয়স (১৮ বছর চার মাস ৪৫ দিন)। জানা যায়, শাহিদার বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের উত্তর কাতুলী গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত শামসুল হকের মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা আক্তার। তিন বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট শাহিদা আক্তার। তার উচ্চতা ৩২ ইঞ্চি, পৌঁনে তিন ফিট। এবার কাতুলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শাহিদা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। পড়ালেখায় সে অনেক ভাল। দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম শাহিদা আক্তারের। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী সে। ডাক্তার দেখিও কোন সুফল আসেনি। শাহিদা প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে প্রতিবেশীরা অনেকেই নানা কথা বলেছেন। যখন তিনি স্কুলে যাওয়া শিখলেন। পিএসসিতে ভালো ফলাফল করলেন। তখন থেকে সহপাঠী ও প্রতিবেশীদের ধারণা পাল্টে গেল। তারপর থেকে শাহিদাকে সবাই নানাভাবে উৎসাহিত করছেন। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে স্কুল কেবিনেট নির্বাচনে শাহিদাকে তার সহপাঠীরা উৎসাহিত করে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেন। ওই নির্বাচনে শাহিদা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। স্কুলের যে কোন কাজে শাহিদাকে পাওয়া যায়। স্কুলের ছেলে মেয়েদের শাহিদা নানাভাবে উৎসাহিত করেছেন। স্কুলে যাওয়া আসার পথে কোন বখাটে ছেলে মেয়েদের উক্তাত্য করে কিনা সে দিকেও নজর দিতো শাহিদা। স্কুলের যে কোন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতেন তিনি। স্কুল সব সময় পরিস্কার পরিছন্ন আছে কিনা সেদিকেও শাহিদা খেয়াল রাখতেন। সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো উপদেশ দিতো। শাহিদার মা জেবুনেসা বেগম বলেন, শাহিদা জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। চিকিৎসা করেও আমরা সুফল পায়নি। শাহিদা প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে প্রথম অবস্থায় মানুষের কাছে নানা কটূ কথা শুনতে হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া স্বত্তে¡ও আজ পর্যন্ত তাকে কেউ সহযোগিতা করেনি। শাহিদাকে যেন প্রতি মাসে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হয়। এটাই সরকারের কাছে আমার দাবি। শাহিদার সহপাঠী তাসলিমা আক্তার বলেন, শাহিদা অনেক ভালো মেয়ে। আমাদের সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করেছে। আমাদের দিকে সব সময় যতœ নিতো। কোন ছেলে আমাদের বিরক্ত করলে শাহিদা প্রতিবাদ করতো। আমরা চাই শাহিদাকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হোক। আরেক সহপাঠী রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা এক সাথে পাঁচটি বছর পড়ালেখা করেছি। শাহিদা পড়ালেখায় অনেক ভালো। সবাইকে অনেক সাহায্য করতো। আমাদের সাথে সব সময় মিলে মিশে চলতো। সে সব সময় আমাদের ভালো উপদেশ দিতো। কোন বিপদে পড়লে শাহিদা আমাদের সে বিপদ থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করতো। শাহিদাকে যদি সরকারি ভাবে প্রতি মাসে সহযোগিতা করা হয়। তাহলে শাহিদার জন্য পড়ালেখা করতে সুবিধা হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহিদা আক্তার বলেন, আমি কাতুলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমি ওই বিদ্যালয়ে পাঁচটি বছর পড়ালেখা করেছি। কোন ছাত্র-ছাত্রী আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। সবাই আমার সাথে ভালো ব্যবহার করেছে। সপ্তম শ্রেণীতে থাকাকালীন স্কুলের সবাই আমাকে কেবিনেট নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেয়। আমি তখন বিপুল ভোটে পাশ করি। দ্বিতীয় বারও নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে পাশ করি। আমি পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আমি প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজের সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে চাই। সবার ভুল ধারণা যেন পাল্টে যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। কারও যেন ভুল ধারণা সৃষ্টি না হয়, শারীরিক প্রতিবন্ধীরা দেশের বুঝা। সরকারি ভাবে যদি আমাকে প্রতি মাসে চলার জন্য ব্যবস্থা করে দেয়। তাহলে আমি পড়াশোনা ও ভালোভাবে চলতে পারবো। এজন্য আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। কাতুলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন বলেন, শাহিদা অতন্ত ভালো মেয়ে। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী সঙ্গে অতন্ত মিশুক। সবার সাথে অতি তাড়াতাড়ি মিশতে পারে। শাহিদা প্রতিবন্ধী হলেও আট-দশটা স্বাভাবিক ছেলে মেয়েদের মতো চলাচল করে। শাহিদা জিএসসি দিয়েছিল ভালো রেজাল্ট করেছে। এবার এসএসসি দিয়েছে আশা করি বিগত দিনেও মতো অনেক ভালো রেজাল্ট করবে। শাহিদাকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হোক এটাই আমাদের দাবি। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন বলেন, সরকারিভাবে প্রতিবন্ধীদের সব সময় সহযোগিতা করা হয়। যদি শাহিদা প্রতিবন্ধী ভাতা না পেয়ে থাকেন। তার কাগজপত্র নিয়ে আসলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com