মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল থেকে ঃ০৯ ফেব্রুয়ারী,শনিবার।
টাঙ্গাইল শহরে ইজিবাইজ সংখ্যা সড়কের ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ সময়ই যানজট লেগেই থাকছে শহরে। ফলে চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে টাঙ্গাইল পৌরবাসীকে। এই যানজটের যন্ত্রণা থেকে শহরবাসীকে রেহাই দিতে পৌর কর্তৃপক্ষ গত বছর দুই সিফ্টে ভাগ করে ইজিবাইকের চলাচলের ব্যবস্থা। প্রথমদিকে এই ব্যবস্থা কিছুটা ফল দিলেও বর্তমান অবস্থা আগের মতোই। কোন ভাবেই টাঙ্গাইল শহরবাসী এই যান জট থেকে পরিত্রান পাচ্ছে না।
এ ছাড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে উন্নয়ন কাজ চলায়, অনেক সড়ক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। উন্নয়ন কাজের ধীর গতির কারনে প্রধান সড়ক গুলোতে সারাক্ষন যান জট লেগেই থাকছে। বিশেষ করে অফিস সময়কাল সকাল ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৫টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত যানজট বেশী দেখা যায়। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার সবচেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ঘরমুখো যাত্রীদের।
টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শহরের নতুন বাসটার্মিনাল থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিকে ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত প্রায়ই যানজট লেগেই থাকে। এটি কখনো কখনো হাসপাতাল গেট হয়ে শামসুল হক তোরণ মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া কুমুদিনী কলেজ মোড়, সুপারি বাগান মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কালিবাড়ী মোড়, বটতলা, পৌরউদ্যানের সামনে, নিরালা মোড়, বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় মাঝে-মধ্যেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। নতুন বাসটার্মিনালের দক্ষিণ পাশ থেকে হাসপাতাল গেট পর্যন্ত রাস্তার পাশে প্রায়ই বাসাইল-সখীপুর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের বাস পার্কিং করে রাখা হয়। যানজটে আটকা পড়লে অধিকাংশ সময় ইজিবাইক চালকরা সেখানে যাত্রী নামিয়ে অটো ঘুরিয়ে অন্যদিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আটকা পড়ে যানজট আরো তীব্র হয়।
এ ছাড়া প্রায় ক্ষেত্রেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালককে ইজিবাইক চালাতে দেখা যায়।
এরাই যত্রতত্র ইজিবাইক থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করায়। ফলে দীর্ঘ যান যট লেগে যায়।
ইজিবাইক যাত্রী আরমান মিয়া বলেন, ‘যানজট নিরসনে দুই শিফটে অটো চলাচল করলেও শহরে যানজট কমেনি। এেেত্র যাত্রীদেরও দোষ রয়েছে। অনেকে পাঁচ-দশ টাকা ভাড়া দিতে একশ টাকার নোট দিয়ে থাকেন। অটো চালক রাস্তার পাশে রেখে ভাংতি দিতে গিয়েও যানজটের সৃষ্টি হয়।’
কামরুল হাসান নামে অপর যাত্রী বলেন, ‘যত্রতত্র যাত্রী উঠা-নামা করা হয়। যাত্রী উঠা নামানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকলে যানজট কম হবে। অটো চালক মো. শফিক মিয়া বলেন, দোষ আমাদের আছে। অটো চালকদের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলে অটো চালালে যানজট কম হবে। আর রাস্তার উপর পার্কিং বন্ধ করতে হবে।’
টাঙ্গাইল রিক্সা, অটোরিক্সা ও ইজিবাইক শ্রমিক সমিতির সভাপতি মোঃ শিহাব উদ্দীন এ প্রসঙ্গে বলেন, টাঙ্গাইল শহরে তিন হাজার ইজিবাইক চলাচল করে। সকালের শিফ্টে ১৫ শত এবং দূপুরের শিফ্টে ১৫ শত ইজিবাইক চলাচল করে। এ ভাবে চলাচল করলে যানজট হবার কথা নয়। তবে কিছু কিছু চালক নিয়ম ভঙ্গ করে রাস্তার মধ্যেই ইজি বাইক থামিয়ে যাত্রী তোলে এতে যানজট তৈরী হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক আছে যাদের ইজিবাইক চালানোর অনুমোতি নেই, কিন্তু তারা সড়কের চলাচলের নিয়ম না জেনেই চালাচ্ছে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে বার বার শহরে মাইকিং করে চালকদের সর্তক করা হয়। এ ছাড়া শহরের উন্নয়ন কাজ চলার কারনে বেশ কিছু রাস্তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে প্রধান সড়কের উপর বাড়তি চাপ তৈরী হচ্ছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন বলেন, ‘শহরের যানজট নিরসনের জন্য তিন হাজার ইজিবাইক দুই শিফটে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন সময় শহরের কিছু কিছু এলাকায় যানজট হচ্ছে। এর কারণ চিহিৃত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি