কালের কাগজ ডেস্ক:২৮ মার্চ-২০১৯,বৃহস্পতিবার।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। প্রশ্নের মুখে পড়েছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রকাশ্য বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। যা ক্রমেই বিএনপিকে স্থুল-দুর্বল রাজনৈতিক দলে পরিণত করছে। বাড়িয়ে তুলছে বিএনপির অস্তিত্ব সংকট।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বিএনপির মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। একটি অংশ আরেকটি অংশের প্রতি ব্যর্থতার অভিযোগ করে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার দাবি পর্যন্ত তুলেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূলের সঙ্গে প্রকাশ্যে বারবার বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
সূত্রমতে, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যান। এরপর থেকে লন্ডনে অবস্থানরত দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের স্থায়ী কমিটির যৌথ নেতৃত্বে বিএনপি পরিচালিত হয়ে আসছে। তারেক রহমান নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবার পর থেকেই দলে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা বলছেন, একযুগ ধরে দল ক্ষমতার বাইরে। সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে হতাশা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ কারণে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য ক্রমেই বাড়ছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, সাময়িকভাবে সব জায়গায় কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবিক কারণে নেতাকর্মীদের আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হচ্ছে না। তবে নেতৃত্বের প্রতি কর্মীরা আস্থা রাখতে পারছেন না বলে দল রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে পারছে না।
এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেক হতাশা-ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু তারা তা বলার জায়গা পাচ্ছে না। এ কারণে বিভিন্ন আলোচনা সভায় তা প্রকাশ্যে আসছে।’ তিনি মনে করেন, বড় পরিসরে নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি মিটিং করে দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে বাদ দিলেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
গত কয়েকদিনে বিএনপির অনেক নেতার বক্তব্যে দলের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থার আভাস পাওয়া গেছে। গত ২৫ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘প্রকৃত গণতন্ত্র চাইলে আগে দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন।’
যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘অনেক ব্যর্থ লোক বিএনপির বড় বড় পদে বসে আছেন। তারা বড় গলায় বক্তব্য দেন। কিন্তু আন্দোলনের সময় তিনটা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দয়া করে যারা ব্যর্থ হয়েছেন, নিজ থেকে দলের পদ থেকে সরে যান।