Logo
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

দৌলতপুরে যমুনা ভাঙ্গনে দুই হাজার বাড়ি নদীতে বিলীন। নিম্ন অঞ্চলে বাড়ি-ঘরে হাঁটু ও কোড় পানি

রিপোর্টার / ৩১ বার
আপডেট সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ২২ জুলাই-২০১৯,সোমবার।
থেমে থেমে প্রবল বর্ষণ ও যমুনা নদীর মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অপরির্বত রয়েছে । দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদীতে তীব্র স্রোতে ও করাল গ্রাসে বাচামারা , চরকাটারী জিয়নপুর,বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৬ টি গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গনে দিশে হারা বান ভাসি মানুষ । গত এক মাসে সর্বনাশা যমুনা নদীর ভাঙ্গনের ফলে প্রায় ২ হাজার শত ৩২ টি বসত বাড়ি,স্কুল,কয়েক শত বিঘা আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানিতে উঠায় বন্ধ রয়েছে ।

২১ জুলাই রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা দেখা গেছে, যমুনা নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত শবাধিক পরিবারের লোক জন বাচামারা উচ্চ বিদ্যালয়,বাচামারা বিবিসি কলেজ,আমেনা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ে,বাচামারা পাকা সড়কে ঘর-দরজা,ধান-চাল,জিনিসপত্র , ঈদের কোরবানীর গরু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে । যারা একটু সচ্ছল বিত্তবান তারা নৌকা যোগে জিনিস পত্র নিয়ে নবীনগর,জেলা সদর ,দৌলতপুর,টেপড়া সহ বিভিন্ন স্থানে ছুটে চলছে । চরকাটারী,বাচামারা,জিয়নপুর,বাঘুটিয়া এই তিনটি ইউনিয়নের নি¤œ অঞ্চলের কিছু কিছু বাড়ি-ঘরে হাঁটু ও কোড় পানিতে ডুবে আছে । ঐ সব বান ভাসি মানুষ বাড়ির-ঘরে উঠানে মাচাঁ পেতে মানবেতর জীবন যাপন করছে । রান্নার করার লাকড়ি,বিদ্ধপানি,শুকনো খাবার ,গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে ।

 

এদিকে যমুনা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে কয়েক সপ্তাহ পূর্বে বাচামার এলাকায় মানিকগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪ হাজার বস্তা( জিও ব্যাগ) নদীর পাড় ঘেষে ফেলছে তা কোন কাজে আসেনি । ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করা জরুরী হয়ে পড়েছে ।
দুপুর ১২ টার দিকে কথা হয় যমুনার পাড় ঘেষে চরকাটারী গ্রামের আমোদ আলী স্ত্রী জাহানারা বেগম এর সাথে তার বাড়ির উঠানে ও ঘরে বন্যার পানি থৈ-থৈ করছে । তিনি দুপুরের খাবার রান্না করছিল ঘরের বারান্দায় মাচাাঁর উপরে । তিনি বলেন, এক সপ্তা ধইরা বাড়ি-ঘরে পানি আমাগো কোন মেম্বর-চেয়ারম্যান খোজ নিলো না । এক বেলা ভর্তা ভাত নানদ্দি,ওয়াই কোন মতে পোলা-মেয়া-স্বামী নিয়া খাই।  তার সাথে কথা বলতে বলতে পামের বাড়ি আনোয়ারা বেগম ,আব্দুল হক, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিন উদ্দিন এসে একই কথা বলেন, এক সপ্তা ধইরা বাড়ি-ঘরে পানি আমাগো কোন মেম্বর-চেয়ারম্যান খোজ নিলো না ।
বাচামারা ইউনিয়নের সকিম মাতবর পাড়া গ্রামের মো: রহমান সেক ৪ টি গরু পালন করছেন। বাড়িতে পানি ওঠায় তিনি পরিবারসহ গরু ৪ টি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি বলেন, ৭ দিন আগে বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। বাধ্য হয়ে বাচামারা উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

 

আমেনা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া মোছা: বেগম ও অজিফা জানান, এই ভাংগা দিয়া ৩ বার নদীতে বাড়ি গেলো । এই স্কুলে ১০/১৫ দিন ধইরা আইছি আমাগো কেও কিছুই দেই নাই ।
নদী ভাঙ্গনের শিকার আরিফা বেগম জানান ৭ দিন আগে আমাগো বাড়ি নদীতে গেছে এই স্কুলে আমরা কোন রকমে ঠাই নিছি। আমাগো চাইল না দিয়া নদী ভাংগা ঠেহান । গরু-ছাগল গেদা বাচ্ছা নিয়া এক সাথে যাকছি ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আলীম জানান, আজ ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাচামারা , চরকাটারী জিয়নপুর,বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ২ হাজার ৩২ টি বসত বাড়ি ভাঙ্গনের তালিকা হাতে পেয়েছি। ইতিমধ্যে সরকারী ভাবে কয়েক দফায় সাড়ে ৬২ মেট্টিক টন চাল ও নগদ সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। আগামী মঙ্গলবারে মধ্যে সাড়ে ৬২ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ৪ লক্ষ বিতরন করা সম্পুর্ণ হবে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা শারমিন বলেন, সরকারী ভাবে কয়েক দফায় সাড়ে ৬২ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে নগদ ৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে । তিনি বলেন, বাচামারা ও চরকাটারী ৬/৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভাব নয়। এখানে ভাঙ্গন রোধে ও স্রোত ঠেকাতে বিকল্প প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতে হবে ।
। ####

কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি


এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com