নিজস্ব প্রতিবেদক:১৪এপ্রিল- ২০১৯,রবিবার।
নতুন বাংলা বছরে রমনার বটমূলের বৈশাখী বার্তা থেকে অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অবিচল থাকার ডাক দেওয়া হয়েছে।
ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন বলেছেন, ‘অন্তরে অন্যায়ের বিরোধিতা লুকিয়ে না রেখে প্রত্যেকে নিজেকে বিশুদ্ধ করার চেষ্টা করি। আর আমরা যেন নীতিবিহীন অন্যায় অত্যাচারের নীরব দর্শকমাত্র হয়ে না থাকি।’
‘প্রতিবাদে প্রতিকার সন্ধানে হতে পারি অবিচল- নববর্ষ এমন বার্তাই সঞ্চার করুক আমাদের অন্তরে। শুভ হোক নববর্ষ।’
প্রসঙ্গত, যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আগুনে ঝলসে প্রাণ হারানো নুসরাতের জন্য যখন ক্ষোভে ফুঁসছে সারাদেশ, ঠিক সেই মুহূর্তে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। আর বর্ষবরণের কর্মসূচিতে সব সামাজিক অনাচারের বিরুদ্ধে শুভবোধের জাগরণের এই আহ্বান করা হলো।
রোববার নানা আয়োজনে, নানা আঙ্গিকে সারাদেশে চলছে বর্ষবরণ। সংগীতায়ন ছায়ানট রাজধানীর রমনা বটমূলে ১৪২৬ বঙ্গাব্দকে বরণ করেছে সম্মেলক কণ্ঠের সংগীতে। সেইসঙ্গে এক মিনিট নীরবতায় শপথ নিয়েছে সবাই, সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে তারা।
সনজীদা খাতুন বলেন, নিষ্কলুষ শিশু সন্তান কোনো সমাজবাসীর অত্যাচারের শিকার হয় কী করে? সমাজ কি পিতা-মাতা, ভাই-বোন, সন্তান-সন্ততির গৃহ আর প্রতিবেশী নিয়ে গঠিত শান্তি নিবাস নয়?
তার মতে, স্বার্থান্বেষী অমানুষদের আত্মসুখ সন্ধানের ফলে নির্যাতনের হাত থেকে পরিত্রাণ পায় না পরিবার। সমাজের কচিকাঁচা থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, সমাজের কোনো মানুষ। কিছু মানুষ কি পাষণ্ড হয়ে উঠলো!
তিনি বলেন, নববর্ষ যদি ভ্রাতৃত্ববোধ-মানবতাবোধের উন্মেষ না ঘটাতে পারে, তবে নতুন দিন কী বার্তা নিয়ে আসে?
এ অন্যায়ের প্রতিবাদে এবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সনজীদা খাতুন। এরপর সবাইকে দাঁড়িয়ে এক মিনিটি নীরবতা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই উঠে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করব, আমাদের ক্ষোভ জানাব, প্রতিবাদ জানাব, দেশে অনাচারের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, নুসরাত জাহান, তনু, সাগর-রুনি, মিতু… যে সমস্ত বিষয়ে আমরা আজ পর্যন্ত কোনো খবর পেলাম না বিচারের, সেসব বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং বিগত প্রাণগুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকব।
এই নীরব প্রতিবাদের শেষে ছায়ানট সভাপতি বলেন, অত্যাচার অনাচার নিপাত যাক, জয় হোক সত্যের সুন্দরের।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি