শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :২৯ মে-২০২০,শুক্রবার।
বৈরী আবহাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ইরি-বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে নীলফামারীর কৃষককেরা। সাইক্লোন আম্পান ও টর্ণেডোর আঘাত এবং আগাম অতিবৃষ্টির কারণে ইরি-বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারছেনা তারা।
সরেজমিনে জেলার কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে গেলে দেখা যায়, মাঠে থাকা পেঁকে যাওয়া ধান বৈরী আবহাওয়ায় মাটিতে নুইয়ে পড়ায় কৃষকরা তা কেটে নিয়ে উঠানে নিয়ে মাড়াই করতে পারছে না অতিবৃষ্টির কারণে। অনেকে মাড়াই করা ধান ঘড়ে তুলে তা শুকাতে পারছে না। গত ক’দিন থেকে প্রত্যাশিত রোদ না থাকায় এমন অবস্থা হয়েছে এই জনপদে। কৃষকদের ঘড় ও উঠান এখন সিক্ত ধানে ভর্তি। ধানে ফ্যানের বাতাস দিয়ে মিলছে না কাঙ্খিত ফল। ফ্যানের বাতাসে অনেকের হয়েছে সর্দি।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউপির কলকুটি পাড়ার কৃষক রমজান আলী (৪০) ও যদুমনির রওশন আলী (৩০) জানান, সপ্তাহ আগে তারা মাঠ থেকে ধান কেটে নিয়ে রোদ অভাবে তা শুকাতে পারছেন না। প্রায় ৪শ’ মন ধান নিয়ে তারা পড়েছে বিপাকে ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, জ্যৈষ্ঠ মাসে আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে এমন সমস্যা হয়েছে। মাড়াইকৃত ধান স্তুপ আকারে না রেখে ছড়িয়ে দিয়ে বাতাসে শুকানোর পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ ধান কর্তন ও মাড়াই হয়েছে। এবারে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ১১ হাজার ৫০ হেক্টর জমির ধান। এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭শ ৯০ হেক্টর জমির ধান কর্তন ও মাড়াই হয়েছে।
একই অবস্থা বিরাজ করছে সৈয়দপুর উপজেলাতেও। উপজেলার বোতলাগাড়ী ও কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা বাড়ির উঠানে ধান কেটে মজুদ করে রেখেছে। রোদের অভাবে সময় মত শুকাতে পারছেন না। এতে অনেকের ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আবার অনেকের ধান ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষেতেই হেলে পড়ে নষ্ট হতে বসেছে। বৃষ্টির কারণে কেটে নিয়ে আসতে পারছেনা। আবার কোন রকমে কেটে আনলেও মাড়াই করা বা শুকানোর ক্ষেত্রে পড়ছে চরম বিপাকে।