
শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ০৯ জুন-২০২০,মঙ্গলবার।
নীলফামারী সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবিবর রহমান এর বিরুদ্ধে ত্রানের চাল ওজনে কম দিয়ে চুরি. আত্মসাৎ ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে বিচার ও বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যরা। সোমবার (০৮ই জুন) সকাল ১১টায় পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ইউপি সদস্য নুর আলম ভুট্টু এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান সরকার বাবু, মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ বেলাল হোসেন, ইউনিয়ন প্রতিবন্ধীদের সভাপতি মোঃ আসিদুল ইসলাম। এছাড়াও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই চেয়ারম্যান একজন চোর। কিছুদিন আগে করোনার ত্রানের চাল ওজনে কম দিয়ে চুরি করার চেষ্টা করলে হাতে নাতে ধরা পড়ে। আবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তমা রানী নামে এক মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক রেখে দীর্ঘদিন ভোগ করে। এখন তমা রানী বউয়ের দাবি নিয়ে তার বাড়ী গেলে সে মাইরধোর করে বের করে দেয়। তমা রানীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক এলাকার সবাই জানে।
বক্তার আরো বলেন, চেয়ারম্যান একটু প্রভাবশালী দেখে প্রশাসন মনে হয় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। কিছুদিন আগে ত্রানের চাল আত্মসাতর সময় ধরা পড়লেও তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। আমরা পঞ্চপুকুর ইউনিয়নবাসী এমপি মহোদয়, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে এই দুশ্চরিত্র, লম্পট ও জেনাখোর চেয়ারম্যানকে বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী সরকার পাড়ার জোহেরা খাতুন বলেন, আমি চেয়ারম্যানের কাছে আমার বিধবা ভাতা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চায়। আমি বিধবা মানুষ অন্যের বাড়ীতে কাজ করে টাকা জমিয়ে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেই। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন মাসের নাম বলে সময় পার করছেন। আমায় এখনো বিধবাভাতার কার্ড করে দেয়নি।
উল্লেখ্য গত ৫ জুন বিকাল ৪টায় সৈয়দপুরের একটি আবাসিক হোটেলে নারীসহ আটক হয় চেয়ারম্যান হাবিবুর। তার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা তমা রানী তাকে এখানে হাতে নাতে আটক করে এবং মোবাইলে ভিডিও করে। পরে নিজ দলীয় হোটেল মালিক ও ২ জন মিডিয়া কর্মী এবং নেতার মধ্যস্ততায় ৩ লাখ টাকায় তাত্ক্ষণিক দফারফা করে দ্রুত সটকে পড়েন তিনি। পুলিশ ও গোয়েন্দাসহ সাংবাদিকরা বিষয়টা জানার আগেই যেন ধামাচাপা পড়ে। কিন্তু পরদিন তমা রানী স্ত্রীর দাবী নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে সব ফাঁস করে দেয়। পরে বেশ কিছু পত্রিকায় এ সংবাদ প্রকাশ হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৭ জুন সংবাদটিকে মিথ্যে আখ্যায়িত করে প্রতিবাদে ভাড়াটি লোকজন দিয়ে মানববন্ধন করায় চেয়ারম্যান। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।