কালের কাগজ ডেস্ক ১১ এপ্রিল ২০১৯, বৃহস্পতিবার।
মাদ্রাসা অধ্যক্ষের নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় আরও দুই আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তারা হলেন- নুসরাতের সহপাঠী ও মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি ও শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ।
বৃহস্পতিবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার পপি ও যোবায়েরকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
এদিন ফেনী জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ বলেন, এখন থেকে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য করা হবে।
বুধবার এ মামলার প্রধান আসামি ফেনী ইসলামী সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ ছাড়া ওই মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন এবং নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলামের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগের দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয় নুর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের। তাদেরও পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন আদালত।
প্রসঙ্গত ১০৮ ঘণ্টা আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক রায়হানা আউয়াল যুগান্তরকে জানান, মৃত্যুর আগে তিনি লাইফসাপোর্টে ছিলেন।
৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসাছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে, এমন সংবাদে তিনি ছাদে যান। সেখানে বোরকাপরা ৪-৫ জন তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়।
অস্বীকৃতি জানালে তারা রাফির গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি