শাহজাহান বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ। ১২ এপ্রিল ২০১৯
পহেলা বৈশাখে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসব দেখতে চাইলে চলে আসুন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচার যমুনার পাড়ে। সেই সাথে ভ্রমন পিপাসুরা দেখতে পাবেন আরিচার যমুনা নদীর স্বচ্ছ পানি ও পাটুরিয়া ঘাট এবং তেওতা জমিদার বাড়ির মনোরম দৃশ্য। যা চোখে না দেখলে ভাষায় বুঝানো যাবে না সৌন্দর্য। তেওতা জমিদার বাড়ির পুকুর পাড়ে রয়েছে সানবাধানো ঘটলা, পুকুরে রয়েছে পদ্ম ফুল, নজরুল-প্রমিলা স্মৃতি-বিজড়িত সানবাঁধানো বকুল তোলা ও নজরুল মঞ্চ। তেওতা জমিদার বাড়ি নবরত্ম মটটি দেখতে অনেক সুন্দর।
আগামী পহেলা বৈশাখ ১৪২৬ বঙ্গাদ্বে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আরিচা ঘাটের যমুনা নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বর্ণিল বৈশাখী ঘুড়ি উৎসব। সেই সাথে আরো থাকছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা।
শিবালয় ‘শতদল’ সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠন এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করেছে।
ঘুড়ি উৎসবে ২৪জন সেরা ঘুড়িয়ালদের বৈচিত্রময় ঘুড়ির জন্য রয়েছে আকর্ষনীয় পুরুস্কার।
ঢাকা জেলার পাশেই মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় আরিচা ঘাটের অবস্থান। এক সময় বাংলাদেশের নাভী বলে ক্ষ্যাত ছিল এ আরিচা ঘাট। ঢাকা থেকে সকালে রওয়ানা দিলে দিনে দিনেই বেড়িয়ে যাওয়া যাবে। আরিচা ঘাটের যমুনা নদীর পাড়ে দাড়ালে স্বচ্ছ ও ঘোলা পানি আর বালু আপনাকে সমুদ্র সৈয়কত কক্সবাজার আর কুয়াকাটার কথা মনে করিয়ে দিবে। প্রিয়জনসহ নৌকা এবং স্পিডবোটে যমুনায় ঘুড়ে বেড়ানো যাবে।
পরন্ত বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে বোয়ালীর ব্রীজের কাছে রাস্তার দু’পাশে সবুজের চাদরে মোড়ানো বিস্তৃত ধান ক্ষেত আর সতেজ নির্মল বাতাসে ঘুড়ে বেড়ানো কতইনা আনন্দ দেবে ভ্রমন পিপাসুদেরকে।
মানিকগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দের্যে সমৃদ্ধ শিবালয় উপজেলার পিসিপোল কারখানা, আরিচা নৌ-বন্দর এলাকা, নিহালপুর-জাফরগঞ্জ বেরিবাধ, পদ্মা-যমুনার বুকে জেগে উঠা বেশ কয়েকটি চরাঞ্চল, তেওতা জমিদারবাড়ি এলাকা এবং পাটুরিয়া ঘাট এলাকার অবস্থানরত ছোট-বড় অসংখ্য নৌযান যেমন-রো-রো ফেরি, কে-টাইপ, ইউটিলিটি ফেরি সত্যিই ভ্রমন পিপাসুদেরকে মুগ্ধ করার মতো। এছাড়াও রয়েছে প্রমত্তা পদ্মার বুকে নৌকা নিয়ে মৎসজীবিদের মাছ ধরার দৃশ্য।
বৈশাখের এই ছুটিতে যান্ত্রিক শহরের দুষিত বায়ু থেকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও পরিত্রাণ পেতে নির্মল কোলাহল মুক্ত পরিবেশে পরিবার পরিজন এবং বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়িয়ে আসুন ঢাকার অদুরে আরিচা ঘাটে। যমুনার স্বচ্ছ পানিতে মনের আনন্দে সাঁতার কাটতে পারবেন ভ্রমনপিপাসুরা। তবে সাঁতার না জানলে নদীতে না নামাই ভাল।
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ
ঢাকার গাবতলি থেকে যাত্রী সেবা, নবীন বরণ ও পদ্মা লাইন বাস রয়েছে। এছাড়া পাবনা এক্সপ্রেস ও শ্যালী পরিবহণের বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। এগুলোর ভাড়া ১শ টাকা করে। সাইনবোর্ড থেকে নীলাচল ও গুলিস্থান থেকে বিআরটিসি বাস সার্ভিস রয়েছে।তবে বিআরটিসিতে না উঠাই ভাল। মতিঝিল থেকে মানিকগঞ্জ পর্যন্ত রয়েছে এসিলিং বাস। যার ভাড়া ২শ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন পরিবহণের কোচ/বাসে উঠে চলে আসতে পারেন ঘাটে। ভাড়া ১শ টাকা।
খাবার সুবিধাঃ
পাটুরিয়া ঘাটের পদ্মা রিভার ভিউতে চাইনিজ থেকে শুরু করে বাংলা খাবারসহ সকল ধরনের খাবরই পাওয়া যাবে তবে দাম একটু বেশী। এর আশে-পাশে ছোট-বড় অসংখ্য হোটেল রয়েছে। যেখানে অনায়াসেই সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার পাওয়া যাবে।
এছাড়া আরিচা ঘাটের তাঁজা ছোট মাছের ঝোল এবং পদ্মার ইলিশ ভাজা না খেলেতো আপনার মনই ভরবে না।
কালের কাগজ/প্রতিনিধি/জা.উ.ভি