Logo
ব্রেকিং :
কেন্দুয়ায় হ্যান্ডট্রলির ধাক্কায় শিশুছাত্রের মৃত্যু দৌলতদিয়া পদ্মা নদীর তীর থেকে অজ্ঞাত যুবকের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার ভাইরাল কিংবা ভিউয়ের জন্য গান করি না— ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজু এটি প্রথম আলোর ষড়যন্ত্র: হানিফ প্রতিনিয়ত পত্রিকাটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে : বিপ্লব বড়ুয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক সাংবাদিকদের মুক্তির দাবিতে মানিকগঞ্জে মানববন্ধন নেত্রকোনায় ত্রান ও পুর্নবাসন শাখার আয়োজনে কর্মশালা নতুন শিক্ষাক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে -অঞ্জনা খান মজলিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নেত্রকোনা জেলা আ’লীগ সভাপতি-সম্পাদকের সৌজন্য স্বাক্ষাত প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে পেশাগত দক্ষতার বিকাশ ঘটে –নড়াইল পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

পাখির গ্রাম মুরাদপুর

রিপোর্টার / ২৫ বার
আপডেট মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

কামাল হোসেন, সুনামগঞ্জ থেকে:১১ ফেরুয়ারী-২০২০,মঙ্গলবার।
এত পাখি, এত কিচির মিচির শব্দ আদিকালে দেখেনি মুরাদপুর গ্রামবাসী। হাওর বেষ্টিত বৃহৎ এ পল্লীটি সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নে অবস্থিত। গ্রামটি উপজেলা সদর থেকে ২০ কি: মিটার দুরে। এদিকে মুরাদপুর গ্রাম থেকে ৮ কি: মিটার দুরে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া জমিদার বাড়ি। এছাড়া চারদিকে নয়নাভিরাম হাওর আর হাওর। বর্ষায় থৈ থৈ জলের ঢেউ। বসন্তে বাসন্তী হাওয়া। এখানে এসে বাড়তি আনন্দ দিতে যোগ হয়েছে পাখি আর পাখি। এ যেন এক স্বর্গীয় অনুভুতি। যে কারো মনে মুগ্ধতা আনে। দিন দিন পর্যটকদের জন্য বড়ই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এলাকাটি। তবে রাস্তাঘাট সহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আধুনিকতার ছোঁয়া না লাগায় কেউ জানে না এ গ্রামে হাজার হাজার পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। গাছে গাছে, বাঁশ ঝাড়ে ঝাড়ে পাখির কিচির মিচির শব্দে গড়ে উঠা গ্রামটিকে জাতীয়ভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবি স্থানীয়দের। সরজমিনে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর নানা প্রজাতির পাখি গ্রামে গাছের ডালে বাঁশঝাড়ে আসতে শুরু করে। এ বছর এত পাখি এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে যে লাখো ছাড়িয়ে যাবে। পাখির ভাড়ে ডাল ভাঙ্গে। এত পাখি এখানে এমনভাবে বসতি স্থাপন করেছে যেন তাদের বাড়ি এটি। তাই লোকে লোকে গ্রামটিকে এখন পাখির গ্রাম হিসেবেই ডাকতে শুরু করেছে। নানা প্রজাতির পাখিদের মধ্যে রয়েছে, পানকোঁড়ি, সাদা বক, পরালি, ঘুঘু, চুড়ই, ধনেশ, সারশসহ অসংখ্য পাখি। এসব পাখিরা কালিকোটা হাওর, ছায়ার হাওরসহ বিভিন্ন ছোট ছোট হাওরে সারাদিন আহার জোটায়। সুর্য ডুবার আগেই ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ে উড়ে মুরাদপুর গ্রামে ফিরতে শুরু করে। গ্রামের চারপাশের হাওর থেকে হাজার হাজার পাখি ডানা ঝাপটিয়ে যখন গ্রামের আকাশে এসে পেখম মেলে অবস্থান করে তখন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতরণা হয়। পাখির কিচির মিচির শব্দ, ডানা ঝাপটানোর শব্দ, দলবেঁধে সারিসারি দৃশ্য যেন আনন্দের মেঘ বর্ষিত হয় লোকে লোকে। এ দৃশ্য উপভোগ করতে গ্রামের শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ নর-নারী প্রতিদিন গ্রামের বাড়ির উঠোনে, রাস্তার ধারে, স্কুল আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে থাকেন। আবার ভোর হলেই পাখিরা গ্রাম ছেড়ে আহারের সন্ধানে হাওরে বাওরে ছুটে বেড়ায়। তখন প্রাণে প্রাণে স্পন্দিত হয় গ্রাম। পাখিরা পৌষ মাসে আসে আর বৈশাখ এলেই ফিরে যায় তাদের গন্তব্যে। এখানে পাখিরা এত নিরাপদ কেন জানতে চাইলে চমৎকার তথ্য পাওয়া যায়। গ্রামবাসী পাখিকে জাতীয় সম্পদ মনে করে সংরক্ষনের জন্য পাখি শিকারীদের উপর ১০ হাজার টাকা জারিমানার বিধান করেছেন। এমনকি ঢিল ছু’ড়ে বিরক্ত করলেও একই জরিমানার বিধান বহাল রেখেছেন তারা। তাই এ গ্রামে পাখি ডুকা মানে শতভাগ নিরাপদ। এ গ্রামে সব বয়সী নারী পুরুষরা আপন সন্তানের মতো আগলে রাখেন পাখিদের। তবে পখির বিষ্টা এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, বাড়ি ঘর, রাস্তা-ঘাট, দুর্গন্ধ লেগেই আছে। গ্রামবাসী এ দুর্গন্ধ সইতে পারলেও বিষ্টা দুরকরণের উপায় খোঁজছেন। এছাড়া এখানে নেই কোন পর্যটকদের বসার স্থান। ভাটি অঞ্চল হওয়ায় পাখির মেলা দেখা বড়ই মুশকিল। তাই পাখির বিষ্টা পরিস্কারসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি জানান স্থানীয়রা। গ্রামের মুরুব্বি সানজব আলী, হারুন মিয়া জানান, পাখি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ নিরাপদ রাখতে আমরা গ্রামবাসী কেউ পাখি শিকার করলে কিংবা বিরক্ত করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা বিধান রাখা হয়েছে। আমরা চাই পাখির এই অভয়ারণ্যকে জাতীয় ভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করা হোক। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জিতু জানান, মুরাদপুর এখন পাখির গ্রাম। পাখির এই গ্রামকে ঘিরে হতে পারে একটি পর্যটন কেন্দ্র। আমি রাস্তা-ঘাটের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর সাথে কথা বলব। এমন ভাবে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে চাই যেন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা এসে আনন্দের সাথে পাখিদের এ মেলা উপভোগ করতে পারে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী বলেন, সংবাদটি শুনে খুশী হলাম। আমি মুরাদপুর গ্রামের পাখির এ দৃশ্য অবলোকন করতে যাব। পাখিকে ঘিরে যদি পর্যটন গড়ে তোলার মতো পরিবেশ চোখে পড়ে অবশ্যই আমি ভাটি অঞ্চলের এ গ্রামে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার চেষ্টা করব।


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com