Logo
ব্রেকিং :
নেত্রকোনায় জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মশালা অনুষ্ঠিত সিংগাইরে ডাকাতির মালামাল ও অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত গ্রেফতার মানিকগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেন আব্দুস সালাম কেন্দুয়ায় অবরোধের সমর্থনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল নেত্রকোনা-৪ আসনে আ’লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল দৌলতদিয়ায়  নারী ও শিশুদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন প্রকল্প বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত  সহিংসতা ছেড়ে আশাকরি বিএনপিও নির্বাচনে আসবে— স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেলেন উল্লাসে আসছে নাগরপুর   মানিকগঞ্জ-১আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র নিলেন এস.এম জাহিদ নেত্রকোনায় বিএনপির আন্দোলনে সক্রিয় রোটারিয়ান নাজমুল হাসান
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

পৈত্রিক বসতভিটার ২৬ ঘর গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন, খোলা আকাশের নিচে নারীশিশুসহ ৪৫ জন

রিপোর্টার / ৭৬ বার
আপডেট সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:০৭ নভেম্বর-২০২২,সোমবার।

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০ টি পরিবারের বসতভিটার আধাপাকা ঘরসহ ২৬ টি ঘর গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে মাথাগোঁজার একমাত্র ঠাঁই হারিয়ে দুইদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও রোগাক্রান্তসহ প্রায় ৪৫ জন। শীতের রাতে কুয়াশা আর ঠান্ডায় মানবেতর অবস্থায় নিপতিত হয়েছেন পুরো একটি পাড়ার মানুষ।
মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ৩৩ শতক জমির দখল বুঝিয়ে দিতেই এই উচ্ছেদ অভিযান। প্রশাসন এমন কথা জানালেও ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রীম নোটিশ বা সময় না দিয়েই
প্রায় দেড়কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের আর্থিক দাপটের কারনেই এধরনের অমানবিক কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাঙ্গালীপুর মন্ডলপাড়ার মৃত একরামুল হকের ছেলে আব্দুল মোতালেব জানান, দীর্ঘ প্রায় দশ যুগ ধরে ৫৭ শতক পৈত্রিক জমিতে ১০টি পরিবারের বসবাস। এটি আমাদের পূর্বপুরুষ মৃত জমির উদ্দিন চৌধুরীর। কিন্ত পার্শবর্তী খরখরিয়া পাড়ার মৃত সামসুল হকের সন্তানরা ওই জমির মালিকানা দাবী করে বিরোধ সৃষ্টি করায় ১৯৯৮ সালে এনিয়ে মামলা করে আমার বাবা। যা এখনও চলমান।
তিনি বলেন, এরইমাঝে আমার বাবা মারা যায়। এই সুযোগে প্রতিপক্ষ মৃত সামসুল হকের ছেলে সাইফুল ইসলাম স্বাধীন, আব্দুস সামাদ খান ও আব্দুস সবুর খান ভূমি অফিসে মিথ্যা অভিযোগ দেন। তারই প্রেক্ষিতে কোন নোটিশ না দিয়েই গত শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় প্রায় দেড় শতাধিক ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী, ভুমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২ টি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এটা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী হামলার মত অবস্থা।
আব্দুল কাদেরের ছেলে মাসুম রানা বলেন,
এসময় বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ ছিলনা। মহিলা ও শিশুরা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হাত পা ধরে কান্নাকাটি করে জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে সময় চাইলেও তারা কর্ণপাত করেনি। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে ২৬ টি ঘর গুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। আসবাবপত্র, ইলেকট্রিক সরঞ্জামাদিও ভাঙ্চুর করেছে। স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা পয়সা লুট করেছে।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি প্রশাসনের সামনে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভাড়াটে গুন্ডাসহ প্রতিপক্ষরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আশেপাশের লোকজনকে আটকিয়ে রেখেছে। আমি এসিল্যান্ডের কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি কোর্টের লোকদের দেখিয়ে দেন। তারা আদালতের নির্দেশে দখল বুঝিয়ে দিতে এই অভিযান বলে। কিন্তু কেউই এসংক্রান্ত কোন কাগজ দেখাতে পারেননি।
মোছা. হোমায়রা খাতুন নাইস বলেন, একেবারে সন্ত্রাসী কায়দায় অত্যাচার করে আমাদেরকে পথে বসানো হয়েছে। অবৈধ অর্থের দাপটে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষরা প্রতিহিংসাবশতঃ এহেন অপকর্ম করেছে। ঘরবাড়ি, জিনিসপত্র ভেঙে টাকা-গয়না লুটপাট করেও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। যাওয়ার সময় সব গাছপালা কেটে পুরো এলাকাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।
স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার ফজলুল হক মঞ্জু বলেন, এলাকায় এভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে বাস্তুহারা করা চরম অমানবিক। আদালতের রায় পেয়ে থাকলে তা জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত। এভাবে উচ্ছেদের কোন মানে হয়না। আর অভিযানের বিষয়ে পরিষদ বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আগাম নোটিশ করা হয়নি। এমনকি সম্পদ রক্ষায় সময়ও দেয়া হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা সরকার বলেন, আগে জানতে পারলে স্থানীয়ভাবে বসেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জায়গা দখলমুক্ত করা সম্ভব হতো। এতে এত বিপুল সম্পদের ক্ষতি হতনা। এখনও অভিযানের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কিছুই জানতে পারিনি। ১০ টি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিস্ব হয়ে পড়েছে। এটা মানবিক দৃষ্টিতে খুবই ন্যাক্কারজনক হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম জানান, মূলতঃ সৈয়দপুর প্রশাসন কোন অভিযান চালায়নি। বরং যুগ্ম জেলা জজ আদালত, নীলফামারীর অন্য ডিং-০২/২০২১ নং মোকদ্দমার তফসিল বর্ণিত বিত্তে অত্রাদলতের নাজির শ্রী ভগৎ চন্দ্র  কর্তৃক ডিক্রিপক্ষ মোছা. আবেদা বেগম কে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সেকারণেই সেদিন ঘটনাস্থলে আমরা ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এজন্য গত ৩১ অক্টোবর জেলা জজ আদালতের নেজারত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত জজ এ. কে. এম. জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক একটি আদেশপত্র পাই। যার স্বারক নং জে:জে:নীল/নেজারত/২০২২/৩০৯। এর আলোকেই আদালতের কাজে সহযোগীতা করা হয়েছে মাত্র। এই অভিযানের সকল দায় দায়িত্ব আদালতের।


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com