কামরুল হাসান জুয়েল, ফরিদপুর থেকে :১০ এপ্রিল-২০২০,শুক্রবার।
আজ বলবো এক মানবতার গল্পের কবি আলীম আল রাজী আজাদের কথা। দেশের ক্রান্তি লগ্নেও থেমে নেই তার ছুটে চলা। তার এই ছুটে চলাটা তাদের জন্য যাদের নিয়ে অনেকেই অনেক মূহুর্তে ভাবেনা বা ভাবতে চাই না। এভাবে মাসের পর মাস তিনি ছুটে চলছেন অভুক্তের মুখে খাবার তুলে দিতে। বর্তমান সময়ে তার কাজে পরিবর্তন এসেছে দেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে। তবে তারপরও থেমে নেই তার চলা। প্রতিদিন কোন না কোন অভুক্ত ৩০/৫০ পরিবারের হাতে নিয়ম করে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। প্রতিটি দিন সকালের ঘুম থেকে উঠে রাত অবধি গরীব দুখি মানুষের মুখে একটু হাসি ফোটানোর সব চেষ্টাই তিনি করে থাকেন। আর তার এই মানবতার কাজ এখন সারা ফরিদপুর শহরবাসির জন্য এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস যখন লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে দেশে। সেই মূহুর্তে ঘরে থাকার কোন বিকল্প নেই বলা হচ্ছে সরকার তরফ থেকে। আর এই নিয়ম মেনে চলতে গিয়ে অনেক নিম্ম মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আজ বড় কাতর হয়ে পড়েছে অভাবের তারণাই। সেই সময়ে যে যেখান থেকে তার কাছে খাবার চাচ্ছেন সেখানেই তিনি ছুটে চলছেন খাদ্য সামগ্রীর বস্তা মাথায় নিয়ে। এরই মধ্যে ফরিদপুর শহরের এক মানবদরদী ব্যক্তি হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন অনেকের মনের মনি কোঠায়। ইতিমধ্যেই তার ব্যাপক কর্মকান্ডে মানবসেবায় অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে মানুষ যখন চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তখন কবি আলীম আল রাজী আজাদ মানুষকে কিভাবে সহযোগীতা দিয়ে ভালো রাখা য়ায় সেই কাজ নিয়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। খুজে বের করছেন করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারনে কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র ও দুস্থ্যদের। হাতে তুলে দিচ্ছেন চাউল, আটা, ডাল, আলু, তেল, লবন, সাবান, মাক্স, পাপস, ব্লিচিং পাউডার সহ নানা উপকরন। এই মহা দুর্যোগে মানুষকে যখন ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে তখন কবি আলীম আল রাজী আজাদ খাদ্য নিয়ে দুস্থ্য ও অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্প্রতি করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ থেকে সাবধানতা অবলম্বনের স্বার্থে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকার কারণে সমাজের খেটে খাওয়া রিকশা চালক, ভ্যান চালক, দিনমজুর, পথে পড়ে থাকা ভিখারি ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী আজ সম্পূর্ণ রুপে উপার্জন হীন হয়ে পড়েছে। মানবিক কারনেই এই অসহায় পরিবার গুলোকে ন্যূনতম কিছু খাদ্য সামগ্রী দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। এ সংকট কালীন সময়ে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার এই উপার্জনহীন মানুষ গুলোকে কয়েক দিন পর পর জরুরী খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার মানবিক কাজে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে আমি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানবতার কয়েকজন ভাইবোন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের প্রেরিত অর্থ দিয়ে আমি ২৬ মার্চ থেকে শহরের ঝিলটুলি, স্টেশন রোড, টেপাখোলা, কমলাপুর, গোপালপুর, ভাজনডাঙ্গা, সাদিপুর, পূর্ব বিলমাহমুদপুর, বায়তুল আমান, ঈশানগোপালপুর ইউনিয়ন এলাকার খেটে খাওয়া রিকশা, ভ্যান চালক, দিনমজুর, পথে পড়ে থাকা ভিখারি ও কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী ভর্তি ব্যাগ গুলো তুলে দিচ্ছি। এ কাজে তিনি সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, সমাজের অসহায়, নিপীড়িত মানুষের জন্য একটু হাত বাড়িয়ে দিন। এ দেশ আমার আপনার আমাদের সকলের, আসুন দেশকে ভালবাসি দেশের মানুষকে ভালবাসি। আমরা মানবতার গল্পের কবি আলীম আল রাজী আজাদের অনাহারী মানুষের মুখে আহার তুলে দেওয়ার সক্ষমতা দান করবেন ইশ্বর এই কামনা করি।