নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৯ |
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে তিন নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে চুল কেটে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় বন্দর ইউনিয়নের সদস্য ইউসুফ আলীকে ২ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গ্রেফতারকৃত ইউসুফ আলী বন্দর ইউনিয়নের কলাবাগ এলাকার মৃত ওসমান আলীর ছেলে। তিনি ১নং ওয়ার্ডের সদস্য। ইউসুফ এ মামলার প্রধান আসামি।
মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালত এ আদেশ দেন।
সোমবার রাতে বন্দরের কলাবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এর আগে ইউসুফ মেম্বারসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ (৫৫)। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়।
গত শনিবার যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে বন্দর ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাবাগ খালপাড় এলাকার মৃত মফিজউদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ (৫৫), বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার আমিন হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম (৩৫) ও বুরুমদী এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগমকে (৩০) অমানুষিক নির্যাতন করে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। কেটে নেয়া হয় মাথার চুল।
বন্দর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাত থেকে আসামি গ্রেফতারে তার নেতৃত্বে কাজ করছে পুলিশ। প্রধান আসামি ইউসুফ মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ওই এলাকায় আবারও অভিযান চালানো হয়েছে। অচিরেই অন্য আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম জেলা আদালতে আসেন। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন উপপরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) গাজী সালাম ও সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা।
এ সময় ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার ওরফে ফতেহকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয়। পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি কক্ষে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী ফাতেমা মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের কাছে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা বিস্তারিত খুলে বলেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নগুলোও দেখান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, এই মামলায় ভুক্তভোগীদের সহায়তা করব। এই মামলার দায়িত্ব আমি নিতে চাই। আইনি যে কোনো সহযোগিতার জন্য আমি তাদের পাশে আছি।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি