কালের কাগজ ডেস্ক:০৫ এপ্রিল-২০১৯,শুক্রবার।
বিএনপিতে দীর্ঘায়িত হচ্ছে দলত্যাগী নেতাদের তালিকা। এবার সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নাম। চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে তিনি বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কাছে তার অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
যদিও বিএনপির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন মোবাশ্বের। কিন্তু দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সীমাহীন চাঁদাবাজি, দলীয় অবমূল্যায়ন ও জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েই মোবাশ্বের বিএনপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলের জন্য অর্থ-সময় ব্যয় করেও চাঁদাবাজির হাতে সর্বস্বান্ত হওয়ার সংশয়ে দল ছাড়ছেন মোবাশ্বের।
মোবাশ্বেরের দলত্যাগের পেছনে দলীয় সমন্বয়হীনতা এবং লাগামহীন চাঁদাবাজি দায়ী বলে জানিয়েছে বিএনপির নয়াপল্টন পার্টি অফিসের একটি সূত্র। সূত্রটি জানায়, মোবাশ্বের ঢাকার একজন প্রভাবশালী এবং বিত্তশালী নেতা। গুঞ্জন রয়েছে, জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে স্থান করে নেয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন মোবাশ্বের। নির্বাহী কমিটিতে প্রভাব বিস্তার ও জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য মোবাশ্বের একসময় দলের পেছনে দু’হাতে অর্থ বিলিয়েছেন। মোবাশ্বেরকে পরবর্তীতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিএনপির দু’জন সিনিয়র নেতা এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। দলের উপকার করতে এসে চাঁদাবাজদের জালে আটকা পড়ে যান মোবাশ্বের। সর্বশেষ বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য গণ-অনশনের নামে ৫ লাখ টাকা চেয়ে ৩ এপ্রিল একটি চিঠি পাঠানো হয় মোবাশ্বেরের কাছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই চিঠি পেয়েই রাগে-ক্ষোভে দলত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, দলের সব ধরনের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পত্র জমা দিয়েছি। আমি বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাই। দীর্ঘদিন দল করলেও মূল্যায়ন পাইনি। শুধু অর্থ ও সময় ব্যয় হয়েছে। অথচ বিনিময়ে দল আমাকে কিছুই দেয়নি। কাজ করেছি দলের জন্য কিন্তু আমার পাওনা নিয়ে গেছে আরেকজন। এটা তো মেনে নেয়া যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিএনপি করবো না।
একের পর এক নেতাদের দলত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দল থেকে কেউ চলে গেলে সাময়িক শূন্যতা তৈরি হয়। তবে সাংগঠনিকভাবে দলের বিশেষ কোনো সমস্যা হবে না। একজন মোবাশ্বের বিএনপিকে তো বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারবে না। তাই মোবাশ্বেরকে নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
উল্লেখ্য, মোবাশ্বের আলম কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে সেখানে মনোনয়ন পান মো. মনিরুল হক চৌধুরী।