মোঃ আবু বক্কার সিদ্দীক ,মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :১৩ ফেরুয়ারী-২০২০,বৃহস্পতিবার।
জনসেবার মহান ব্রত নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম। তাঁর উদার মানবিকতা,সৃজনশীল চিন্তা-চেতনা ও গঠনমূলক কর্ম-তৎপরতায় দিন দিন মুগ্ধ হচ্ছেন মণিরামপুর উপজেলার সর্বস্তরের জনগন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মানবিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিনি অগনিত মানুষের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন । পাশাপাশি পেয়েছেন অসংখ্য মানুষের ভালবাসা। ২০২০ খ্রিস্টাব্দ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী তথা মুজিববর্ষে জন্ম নেয়া মণিরামপুর উপজেলার প্রতিটি নবজাতক শিশুর পরিবারকে ফলজ ও বনজ বৃক্ষের চারা প্রদানের ন্যায় এক মহতি উদ্যোগ তিনি হাতে নিয়েছেন। জনকল্যাণকর ব্যতিক্রমধর্মী এ ধরনের কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করে তিনি জনগনের হৃদয়ে ইতোমধ্যে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। পক্ষান্তরে তাঁর এই ধরনের কার্যক্রম বিভিন্ন মহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম হাতে নেয়ার পিছনে কী উদ্দেশ্য জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত নারী উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম জানান, ‘মুজিববর্ষে জন্ম নেওয়া সকল শিশুই হবে মুজিব আদর্শের’ এই চেতনায় তিনি প্রতিটি নবজাতকের বাড়িতে যেয়ে আর্শিবাদ করার পাশাপাশি শিশুর পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার লক্ষ্যেই এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের আড়শিংগাড়ি গ্রামের রেজাউল ইসলাম ও সীমা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া ৩ জমজ শিশুর পরিবারকে ৩টি কেরালা জাতের নারিকেলের চারা ও উপহার সামগ্রী প্রদানের মধ্য দিয়ে তিনি এ কর্মসূচীর উদ্বোধন ও শুভসূচনা করেছেন। ওই দম্পতির ৩ জমজ শিশুর জন্মের খবর পেয়ে তিনি তিনটি নারকেলের চারা নিয়ে তাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে নিজ হাতেই এ চারা তুলে দেন। এ সময় নবজাতক তিন শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রিও নগদ অর্থও প্রদান করেন এবং নবজাতক শিশুদেরকে কোলে তুলে নিয়ে আদর-স্নেহ করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের এ ধরনের মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং তিনি মন্তব্য করে বলেন, একজন মমতাময়ী ও মহিয়সী নারীর মতো একটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ তিনি হাতে নিয়েছেন। যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। জনগনের প্রকৃত সেবকের ভূমিকা পালন করছেন নাজমা আপা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি নেহালপুর ইউনিয়নের পাচাকড়ি গ্রামের অনুপ ও পূজা দম্পতির জমজ ৩ শিশুর বাড়িতে যেয়ে তিনি ৩টা কেরালা জাতের নারকেলের চারা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মণিরামপুর সদর ইউনিয়নের দেবিদাসপুর গ্রামে ১টি কন্যা ও ১টি পুত্র সন্তানকে একটি করে কেরালা জাতের নারকেল গাছের চারা ও উপহার সামগ্রী নিয়ে দেখতে যান। ৪ ফেব্রুয়ারি পৌর সভার স্বরূপদাহ ও দোলখোলা এলকায় তিনি দুই নবজাতককে কেরালা নারকেল গাছের চারা ও উপহার নিয়ে দেখতে যান। ৬ ফেব্রুয়ারি মনিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যেয়ে ৪ নবজাতক শিশুর পরিবারের মাঝে কেরালা জাতের নারিকেল চারা ও উপহার সামগ্রী এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। এর পরের দিন উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুর,বারপাড়া ও উত্তর পাড়া গ্রামে তিনটা নবজাতক শিশুর পরিবারের মাঝে তিনটা কেরালা নারকেল গাছের চারা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। এ ছাড়াও কয়েকটি গ্রামের নবজাতাক শিশুর বাড়িতে যেয়ে তিনি নারকেলের চারা বিতরণ, নিজ হাতে তা রোপন ও শিশুর স্বজনদের মিষ্টিমুখ করানোসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খবর পেয়ে তিনি প্রায়ই কোন না কোন গ্রামে জন্ম নেয়া নবজাতকের বাড়িতে স্ব-উদ্যোগে হাজির হচ্ছেন এবং ওই গ্রামের মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও কুশলাদি বিনিময় করছেন। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনছেন এবং সাধ্যমত অসহায় ও সমস্যা জর্জরিত মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেন।
অতি সম্প্রতি মণিরামপুর সদর ইউনিয়নের জালঝাড়া গ্রামের সড়ক দূর্ঘটনায় আহত এতিম কিশোর ইসমাইলের চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি তিনি স্বেচ্ছায় নিজের রক্ত ওই কিশোরের চিকিৎসার জন্য দান করেছেন। বিষয়টি অতি মানবিক হওয়ায় অনেকেই তাঁকে মমতাময়ী এক মহিয়সী নারী হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্তব্য করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি ইতোমধ্যে বিভিন্ন মানুষের নানান সমস্যা সমাধানে বেশ তৎপর ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি কিছু সমস্যা সমাধানে সফল ও হয়েছেন।
তিনি এ প্রসংগে জানান, উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ভরতপুর গ্রামের মতলেব গাজী ও খালেক গাজী আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি-জায়গা নিয়ে দীর্ঘ ৩০বছরের বিবাদ তিনি গত ৮ ফেব্রিয়ারি সরেজমিন উপস্থিত থেকে মিমাংসা করতে সক্ষম হয়েছেন। তা ছাড়া এই নারী জন প্রতিনিধি জনগনের দুঃখ-দুদর্শার কথা শোনা মাত্রই ছুটে যান সেই বাড়িতে। কোন মৃত্যু সংবাদ শোনা মাত্রই তিনি তাৎক্ষনিকভাবে খোঁজ খবর নেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সান্তনা দিতে ছুটে যান সেই বাড়িতে। সদালাপি এবং সদা হাস্যজ্জ্বল উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম তাইতো অল্প দিনেই মণিরামপুর বাসির কাছে বেশ আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিমত পাওয়া গেছে।