রামপ্রসাদ সরকার দীপু ঘিওর(মানিকগঞ্জ) থেকে:০১ মে-২০২০,শুক্রবার।
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে এবার ভুট্রার বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশীয় ভুট্রার পাশাপাশি হাই ব্রিট এ ভুট্রার আবাদ ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক ফলন এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্রার লাভজনক হওযায় ভুট্রার আবাদে ঝুঁকে পরেছে সাধারন কৃষকেরা। পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে এ বছর ভুট্রার আবাদ ভালো হয়েছে। ভুট্রা মাড়াইয়ের কাজ চলছে এখন পুরো দমে। এবার ভালো দাম পেয়ে সাধারন কৃষকের চোখেমুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। বদলে যাচ্ছে অনেক কৃষকদের ভাগ্যের চাকা।
মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, সাটুরিয়া, সিংগাইর প্রতি বছর ব্যাপক ভাবে ভুট্রার আবাদ করে থাকে এলাকার সাধারন কৃষকেরা। ভুট্রার চাষে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে। বিগত সময়ে ফলন ভালো এবং দাম আশানুরুপ পাওয়ায় এলাকার কৃষকেরা ভুট্রা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। উপজেলার বালিয়াখোড়া গ্রামের ভুট্রা চাষি নূর আলম জানান, এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে ভুট্রা আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশাবাদী চলতি মৌসুম শেষে তিনি তার জমি থেকে ৪০ মন ভুট্রা ঘরে তুলতে পারবেন। প্রতিমণ ভুট্রা ৬শ থেকে ৬শ’৫০ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। মাইলাগী গ্রামের এক কৃষক জানান তিনি চলথি মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তার দ্বিগুন ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ বিপুল হোসেন জানান, ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া, পয়লা,সিংজুরী এলাকার কৃষক এ বছর ব্যাপক পরিমানে ভুট্রা আবাদ করেছেন। যে দিকে চোখ যায় শুধু ভুট্রা আর ভুট্রা। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকরা যখন যে পরামর্শ চেয়েছে তা দেয়া হয়েছে। ফসলের রোগ, পোকামাকড়,দমনে চাষীদের গ্রুপ ভিত্তিক সচেতন সভা সহ প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। ভুট্রার বীজ, কীটনাশক, আগাছা দমন, নিবির পরিচর্য়ার সঠিকভাবে করার পরামর্শ দেয়ার কারনে এবার ভুট্রা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে আগামীতে কৃষি ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে এলাকার সাধারন কৃষকরা দ্রুত এগিয়ে যাবে।
ঘিওর বাজারের ব্যবসায়ী ভুট্রা ব্যবসায়ী মোঃ শরিফুল ইসলাম শরীফ জানান, জেলার বৃহত্তম হাট ঘিওর। প্রতি বুধবার হাটে আমি প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মন ভুট্রা ক্রয় করে থাকি। বর্তমানে ৫শ’ থেকে ৬শ’ ৫০ টাকা মন ধরে ভুট্রা কেনা বেচা হচ্ছে। তবে এবার আবাদ বেশি হওয়ায় প্রতি হাটে শত শত মন ভুট্রা বিভিন্ন এলাকার থেকে এই হাটে বিক্রয়ের জন্য আসে। এবার ঘিওরে ২২ হেঃ জমিতে ভুট্রা আবাদ হয়েছে। ঘিওর বাইলজুরি, চরবাইলজুরি, পয়লা, সিংজুরি, মাইলাগী, বৈলট, কুশুন্ডা এলাকায় ব্যাপক ভুট্রা আবাদ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদের জানান, মানিকগঞ্জের, সিংগাইর ,সাটুরিয়া, ঘিওর, দৌলতপুর অঞ্চলে প্রচুর ভুট্রার আবাধ হয়েছে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় সারা জেলাতে ভাল আবাধ হয়েছে। তবে দেশী ভুট্রার চায়তে হাইব্রিড জাতের ভুট্রা চাষে লাভ বেশি। এতে রোগ বালায়ের আশংকা কম। দাও বেশি পাওয়া যায়। জেলায় মোটআবাদি জমির পরিমানে ৮ হাজার ৫শ’ ২২ হেক্টর। প্রতি একরে ১২০ মন ভুট্রা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।