Logo
ব্রেকিং :
নেত্রকোনায় জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মশালা অনুষ্ঠিত সিংগাইরে ডাকাতির মালামাল ও অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত গ্রেফতার মানিকগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেন আব্দুস সালাম কেন্দুয়ায় অবরোধের সমর্থনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল নেত্রকোনা-৪ আসনে আ’লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল দৌলতদিয়ায়  নারী ও শিশুদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন প্রকল্প বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত  সহিংসতা ছেড়ে আশাকরি বিএনপিও নির্বাচনে আসবে— স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেলেন উল্লাসে আসছে নাগরপুর   মানিকগঞ্জ-১আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র নিলেন এস.এম জাহিদ নেত্রকোনায় বিএনপির আন্দোলনে সক্রিয় রোটারিয়ান নাজমুল হাসান
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

মির্জাপুরে ৫৫ দিনে চাঞ্চল্যকর ৯ খুন

রিপোর্টার / ৭২ বার
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২২

মুক্তার হাসান,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:০৩ নভেম্বর-২০২২,বৃহস্পতিবার।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৫৫ দিনের ব্যবধানে স্কুল ও কলেজ ছাত্রসহ চাঞ্চল্যকর নয়টি খুন হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাসহ অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আরো অন্তত ১০টি। অপরাধ প্রবণতার পাশাপাশি শহর ও গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। হঠাৎ করেই অপরাধ প্রবণতা ও মাদকের বিস্তার বেড়ে যাওয়ায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ৫৫ দিনের ব্যবধানে মির্জাপুর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর নয়টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর গোড়াইল গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্র সিফাত (১৩) নির্মমভাবে খুন হয়। সিফাত মির্জাপুর উপজেলা সদরের আফাজ উদ্দিন সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। সিফাতের পিতা শহিদুর রহমান জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে একই এলাকার মেহেতাব ও তালেব সিদ্দিকীসহ তাদের সহযোগীরা ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সিফাতকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যার পর লাশ পুষ্টকামুরী রেললাইনের দক্ষিণ পাশে খেতে ফেলে রাখে। থানায় মামলার পর পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করে। ২১ সেপ্টেম্বর ভাতগ্রাম ইউনিয়নের সিনজুরি গ্রামের কলেজছাত্রী তানিয়া আক্তার (১৮) বখাটে সুজনের অত্যাচার সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তানিয়ার পিতা হারুন মিয়া অভিযোগ করেন, বখাটে সুজন কলেজে আসা যাওয়ার পথে তার মেয়ে তানিয়াকে উত্ত্যক্ত করত। একপর্যায়ে তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। লোকলজ্জায় তানিয়া আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়। থানায় মামলার পর বখাটে সুজন আদালতে আত্মসমর্পণ করে। ৩১ শে অক্টোবর জামুর্কি ইউনিয়নের আগধল্যা গ্রামে ছেলে লিটনের লাঠির আঘাতে তার বাবা আনোয়ার ওরফে দুখাই (৫০) নির্মমভাবে খুন হন। এই ঘটনায় তার ছোট ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার পর লিটনের স্ত্রীকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও লিটন পলাতক রয়েছে। একই দিন ৩১ অক্টোবর চুকুরিয়া গ্রামে গ্রাম্য শালিসে মাতাব্বরদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ডি এম সালমান নামে এসএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। তার পিতার নাম শামসুল আলম। সালমান গল্লী জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু কেউ গ্রেফতার হয়নি। ২৬ শে সেপ্টেম্বর বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার হয় সখিনা বেগম (৫০) নামের এক নারীর। ঘটনার পর তার ভাই বাদশা মিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর তার পূর্বের স্বামী মফিজ মিয়া ও তথাকথিত প্রেমিক লেবু সিকদারকে বাঁশতৈল ফাঁড়ি পুলিশ গ্রেফতার করে। ২৭ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে লেবু সিকদার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির হাজতখানায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। লেবু সিকদারের পরিবারের দাবি, হাজতখানায় লেবু সিকদার আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর আজগানা ইউনিয়নের চিতেশ্বরী গ্রামের শহিদ মিয়ার ভাড়া বাসায় আনোয়ারা বেগম (৩৪) নামে এক গৃহবধূ খুন হন। এ ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ আনোয়ারা বেগমের সাবেক স্বামী পলাশকে গ্রেফতার করেছে। আনোয়ারা বেগমের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায়। সর্বশেষ খুন হয় শিশুপুত্র নুরুল ইসলাম নুরু (১৩)। তার পিতার নাম মোসলেম খান। গ্রামের বাড়ি গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামে। তার পিতা মোসলেম খান অভিযোগ করেন, গত ১১ অক্টোবর তার শিশু পুত্র নুরু হঠাৎ নিখোঁজ হয়। ঘটনার এক দিন পর পাশের বাড়ির ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। একের পর এক হত্যা, খুন এবং আত্মহত্যার ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। তারা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেট করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু কিছু সদস্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবার। অপর দিকে মির্জাপুর উপজেলায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার হয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, লতিফপুর, বহুরিয়া, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে মাদক ও জুয়া চলছে বলে ৮-৯ জন ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বিগত দিনে যেসব খুনের ঘটনা ঘটেছে তদন্ত সাপেক্ষে অধিকাংশ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাসহ মামলা দেওয়া হচ্ছে। মির্জাপুরে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো।


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com