নিজস্ব প্রতিবেদক :১০এপ্রিল ২০১৯,বুধবার।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি মারা গেছেন।
আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল।
তিনি জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে নুসরাতের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামের বাড়ি ফেনীতে নিয়ে যাওয়া হবে। আজকে লাশ হিমঘরে রাখা হবে।
ডিপ বার্নের কারণে নুসরাতের বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ ছিল বলে জানিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সেন।
বুধবার রাতে সামন্ত লাল বলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল নুসরাতকে বাঁচানোর জন্য। তবে ডিপবার্ন হওয়ায় প্রথম থেকেই বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ ছিল।
তিনি আরো বলেন, আজকেও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের সাথে কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না মেয়েটিকে।
এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করেই নুসরাতের শারীরিক অবস্থার খুবই অবনতি হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, নুসরাতের শরীরে ৮০% এর বেশি বার্ন ছিল। তার মধ্যে ৬০% ছিল ডিপ বার্ন। আগুনে তার শ্বাসনালীও পুড়ে গিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, নুসরাতের শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল। কেরোসিন নিজেই কিন্তু একটি টক্সিক, যা ফুসফুস এবং ব্রেনের কার্যক্ষমতাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান। এ সময় মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪-৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি