
শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি:১৩ আগস্ট-২০২২,শনিবার।
সেনাবাহিনীর কর্নেলের মেয়ে ও বোন পরিচয়ে প্রতারনা করে অভিনব কায়দায় যুবকের সর্বস্ব লুটে নিয়েছে দুই নারী। তাদের পাতানো ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েও উল্টো প্রাণনাশের হুমকিতে দিশেহারা যুবক শেষে মিডিয়ার শরণাপন্ন হয়ে বিচার দাবী করেছেন এহেন অমানবিক ও বেআইনী কাজের। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার।
শনিবার (১৩ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে তিনটায় ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ভুক্তভোগী কাজী ইমরান আহমেদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিতভাবে এব্যাপারে অবগত করেন। তিনি ঢাকা মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার অর্ন্তগত ষোলঘর ইউনিয়নের কাজী শাহাদাত হোসেন এবং কাজী শিরীনা আক্তারের ছেলে।
তিনি জানান, অভিযুক্ত ওই দুই নারী হলো ডোমার উপজেলার ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন চিলাহাটি এলাকার রফিকুল ইসলামের দুই মেয়ে রাহাত জাহান ও চাঁদ সুলতানা। তাদের প্রতারণা ও সম্পদ আত্মসাৎ এর প্রতিবাদে ভুক্তভোগী কাজী ইমরান আহমেদ এই সংবাদ সম্মেলন করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত দুই বছর আগে চিলাহাটি এলাকার রফিকুল ইসলাম ও তাহমিনা বেগমের মেয়ে রাহাত জাহান (৩৮) এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তাদের পরিচয়। এই পরিচয়ের সুত্রধরে খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাধে রাহাতের বড়বোন চিলাহাটি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রাজিয়া সুলতানা এবং তার স্বামী ডাঙ্গাপাড়া গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিএম মজিবুর রহমান বিপুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
কাজী ইমরান আরো বলেন, রাহাত জাহান নিজেকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকার কর্নেল অবঃ জগলুল আহসানের একমাত্র কন্যা পরিচয়ে দীর্ঘদিন যাবত আমার সাথে প্রতারনা করে আসছেন। বন্ধুত্বের কয়েকমাস অতিবাহিত হওয়ার পর তার বোন দুলাভাইয়ের আমন্ত্রণে আমি চিলাহাটি মার্চেন্ট স্কুল সংলগ্ন তাদের বাসায় যাই। এক পর্যায়ে তাদের পরিবারের সাথে আমার পরিবারের সম্পর্ক ঘনিষ্ট হয়ে উঠে।
আমার ব্যক্তিগত আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে মোটা অংকের টাকার জন্য আমি কিছু জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাহাতের বোন দুলাভাই আমার জমির কাগজপত্র নিয়ে ব্যাংক লোন নিয়ে দেবে বলে আমার কাছ থেকে সুকৌশলে জমির মূল নথিপত্র হাতিয়ে নেয়। পরে জমি বিক্রির ব্যাপারে খোঁজ খবর নিলে তারা বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা শুরু করে। জমির কাগজপত্র ফেরত দিবে মর্মে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।
একপর্যায়ে কৌশলে আমার পার্সপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংকের চেকবই, ইউসিবি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক এর ব্যাংক কার্ড ও মূল চেকবই সমুহ, নভো এয়ার ইসুকৃত ডুয়েল কারেন্সি কার্ড, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের মুল কপি, নগদ ডলার, বৈদেশিক মুদ্রা এবং এয়ার লাইন্স সমুহের মেম্বারশিপ কার্ড, মূল ট্রেড লাইসেন্স, বিভিন্ন দেশের মেম্বারশিপ কার্ড, ডিসিআর সংশ্লিষ্ট যাবতীয় এবং ইনকাম ট্যাক্সসহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং নগদ ১,৩০,০০০০/- (দশ লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়।
সম্পর্কের অবনতি হলে রাহাত নিজেকে রাজশাহী মেডিকেলে কর্মরত ব্রিগেডিয়ার শামিম ইয়াজ দানী এর ছোট বোন পরিচয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। কিছুদিন পর আমি তার কাছে আমার যাবতীয় কাগজপত্র ফেরত চাইলে সে আমার জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আরও ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে বসে। তার বোন দুলাভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারাও আমার কাছে টাকা চেয়ে বসে এবং আমি যদি কোন রকম আইনের আশ্রয় গ্রহণ করি তাহলে আমার চরম ক্ষতি সাধন করার হুমকি প্রদান করেন। তাদের সবার এমন আচরণে আমি দিশেহারা হয়ে যাই, তাই আমি আপনাদের মিডিয়ার শরনাপন্ন হয়ে এই ঘটনার সঠিক বিচারের দাবী জানাচ্ছি। (ছবি আছে)