
শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:০১ নভেম্বর-২০২২,মঙ্গলবার।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে মোটরযানের টায়ার থেকে ফুয়েল তৈরীর একটি অবৈধ কারখায় অগ্নিকান্ড ঘটেছে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে তিনটায় উপজেলার খিয়ারজুম্মা এলাকায় সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কের পাশে একটি ইটভাটা সংলগ্ন এই দূর্ঘটনা ঘটে। এতে কারখানার মেশিনম্যান আব্দুল আজিজ (৩২) মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
ওয়েল্ডিং করাকালেই অসাবধানতা বশতঃ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের সৃষ্টি হয়ে আগুনের সূত্রপাত। আগুন মুহুর্তেই পুরো মেশিনরুমে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই প্রবল ছিল যে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরটির আরসিসি ঢালাই ছাদ ও ইটের দেওয়াল ধ্বসে পড়ে।আগুনে পুড়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হলেছে।
খবর পেয়ে প্রথমে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেসন ম্যানেজার রশিদ মো. আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে একদল এবং পরে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস দলও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা প্রায় ৩০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল বাহিনী দ্রত আসায় বিষ্ফোরণের মত ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পায় কারখানার দুইটি বিশালাকৃতির বয়লার।
এসময় লোকজনকে বয়লার বিষ্ফোরণের আশংকায় কারখানার আশেপাশে ভিড়তে দেয়া হয়নি। কারণ বয়লারের আগুন লাগলে তা ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া এখানে রক্ষিত সব মালামালই দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থ।
এসময় মেশিনরুমে কর্মরত মেশিনম্যান আব্দুল আজিজের (৩২) শরীরে আগুন লাগে। এতে সে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয় এবং ভয়াবহ অবস্থায় দৌড়ে বেরিয়ে আসে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। উপস্থিত লোকজন দ্রুত তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ কারখানাটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। এখানে টায়ার গলিয়ে তা থেকে বিটুমিন সহ বিভিন্ন ফুয়েল (জ্বলানী তেল) তৈরী করা হয়। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই কারখানা থেকে নির্গত ধোয়া এবং তরল বর্জ্য পরিবেশ ও মাটির দূষণ ঘটায়। সেইসাথে স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর এর রাসায়নিক প্রভাব।
সুুুুদূর ঢাকা থেকে রাজু আহমেদসহ কয়েকজন ব্যক্তি যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় ঠিকাদার মানোয়ার হোসেনের ইটভাটা সংলগ্ন কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই কারখানাটি স্থাপন করেছেন। এখানে ২২ জন কর্মচারী কর্মরত। অগ্নিকান্ডের সময় টেকনিক্যাল এক্সপার্ট ও ইলেকট্রিক সুপারভাইজার কেউই উপস্থিত ছিলনা।
এব্যাপারে কারখানার ম্যানেজার আল আমিন বলেন, ওয়েল্ডিংয়ের কারণে নয় বরং এমনিতেই শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লেগেছে। অগ্নিকান্ড প্রতিরোধক কোন ব্যবস্থাই নেই কেন? এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। একইভাবে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃৃপক্ষ ও মালিকপক্ষও প্রশ্নটি এড়িয়ে যায়।