কালের কাগজ ডেস্ক: ২৬ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল নির্বাচনের আগে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। কিছু দিন আগে তিনি কারামুক্ত হয়েছেন। তাকে নিয়ে শুক্রবার শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তারা জিয়ার কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সরকার খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি না দিলে বিএনপি ‘আন্দোলন জোরদার করবে’ বলে হুশিয়ার করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকে এখানে শপথ নিয়েছি- দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য সব রকমের আন্দোলন বেগবান করব এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, আটক নেতাকর্মীদের মুক্ত করার জন্য এবং তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আমরা অবশ্যই আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হব ইনশাল্লাহ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। তবে তাতে তেমন সাফল্যের দেখা তারা পাননি। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কটাক্ষও তাদের বিভিন্ন সময়ে সইতে হয়েছে। বিএনপির দাবি- সরকারি বাধায় তাদের আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করে ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনও সময় আছে, আপনারা রাজবন্দিদের মুক্তি দিন, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন এবং মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করুন।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গত দেড় বছর ধরে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বর্তমানে কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে তার চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যিনি সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, সেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ মিথ্যা বানোয়াট মামলায় দণ্ড দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় বেআইনিভাবে তাকে ১৮ মাস ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। এখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। এই অসুস্থ অবস্থায় তিনি সঠিক চিকিৎসা পর্যন্ত পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, সরকারের কাছে জোর দাবি করছি- সব রাজবন্দির মুক্তি দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আনুন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিন; না হয় জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
একাদশ সংসদকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানাই আমরা। অন্যথায় এ দেশের মানুষ কোনো দিনও আপনাদের ক্ষমা করবে না।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল্লাহ হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ছাড়াও মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল গত ১১ জুলাই জামিনে মুক্তি পান। তার বিরুদ্ধে ২১২টি মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়। আজ তাকে নিয়ে জিয়ার মাজারে যান মির্জা ফখরুল।