নিজস্ব প্রতিবেদক,চট্টগ্রাম: ৩০ জুলাই ২০১৯,মঙ্গলবার।
যারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে, তারা ইতিহাস বিকৃত করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা এই বিতর্ক তৈরি করেছে তারা ইতিহাস বিকৃত করতে চায়। তবে মানুষ এখন প্রকৃত ইতিহাস জেনে গেছে। এরপর কেউ কেউ উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলার চেষ্টা করে।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির উদ্যোগে ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর : তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা আর ঘোষণা দেয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। বেতারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ (২৬ মার্চ) করেন তৎকালীন অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা সিদ্ধান্ত নেন, সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে পাঠ করানোর। তখন জিয়াউর রহমানকে দিয়ে পাঠ (২৭ মার্চ) করানো হয়। এর আগে ২৬ মার্চ নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী নুরুল হক শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন।
দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে ‘কুঁড়েঘর বাস্তবে নেই’ বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে চলছে, ছেঁড়া কাপড়-স্যান্ডেল এখন আর কেউ পরে না। ঘরে ঘরে গিয়ে কেউ বাসি ভাত খোঁজে না। কবিতা ছাড়া আর কোথাও কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখন আর সন্তানরা মাকে বলে না, ‘মা আমাকে বাসি ভাত দাও’। এখন আর দেখা যায় না কোনো মায়ের সন্তানকে রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটতে।
জলাবদ্ধতা ও অপরিচ্ছন্নতা নিরসনে নাগরিকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে কেউ একটা কাগজের টুকরো রাস্তায় ফেলে না। ঢাকা শহরে এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন আর সিটি করপোরেশনের ৫-৭ হাজার কর্মী শহর পরিষ্কার করবেন- এভাবে শহর পরিষ্কার রাখা যাবে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজেরা নিজেদের শহর পরিষ্কার রাখুন। কেউ যেন নালায়, নর্দমায়, রাস্তায় আবর্জনা না ফেলি। আমি নিজে যেখানে সেখানে কিছু ফেলি না। টিস্যু কোথাও ফেলতে না পারলে আমি পকেটে রাখি। আমার ছেলে-মেয়েকেও এ বিষয়ে তাগিদ দিই। আমার চালকও যদি কখনও যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলে, তাকে বকা দিই।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিডিএকে দেয়া হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, চসিককে দেয়া হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দেয়া হয়েছে ১৬শ কোটি টাকা। আরও কিছু প্রকল্প আছে। তবে এখানে প্রচণ্ড সমন্বয়নহীনতা আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশন রাস্তা করে গেল। দেখা গেল দুই মাস পর ওয়াসা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন খুঁড়ে ফেলছে। বিদেশেও এভাবে খোঁড়াখুঁড়ি আছে। তবে সেখানে সমন্বয় করা হয়। রাস্তা খুঁড়লে সাথে সাথে ঠিক করে দেয়া হয়। কিন্তু এখানে সাথে সাথে মেরামত করে দেয়া হচ্ছে না। রাস্তা মেরামতের জন্য টাকা বরাদ্দ প্রকল্পেই থাকে, কিন্তু সেটা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান