কালের কাগজ ডেস্ক:০৭ ফেব্রুয়ারি,বৃহস্পতিবার।
নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বয়কট করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি আসলে ‘ইলেকশন ফোবিয়ায়’ ভুগছে। নির্বাচনে হারতে হারতে তারা এখন জয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছে। হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন বয়কট করছে কিনা- সেটা তাদের জিজ্ঞাসা করুন। বয়কট করলে তো বলা যাবে যে, আমি বয়কট করেছি। তখন হেরে যাওয়ার ভয়টা তো থাকল না।
আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের জন্য বিএনপির কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি। পরাজয়টা এতই শোচনীয়, এত বড় একটা দল জাতীয় নির্বাচনে খুব কম কেন্দ্রেই তারা এজেন্ট দিতে পেরেছিল। এজেন্ট দেয়ার মতো ক্ষমতা তাদের ছিল না। অথচ বিএনপির অনেকে কেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য হুশিয়ারি দিয়েছিল। এটাই তো তাদের সাহসের দৌড়।
বিএনপির সমাবেশ পিছিয়ে দেয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনুমতি না পেয়ে সমাবেশ বন্ধ করেছে- এমন অভিযোগ অন্তত পাচ্ছি না। অনুমতির জন্য কোনো অসুবিধা হবে না। তারা যখনই অনুমতি চাইবে, তখনই তারা সমাবেশের অনুমতি পেয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, তবে রাস্তায় কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারবে না। সেটা শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের জন্যও প্রযোজ্য। বিএনপি পূর্ব অনুমতি নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করুক। সভা তারা করছে না তাদের নিজেদের কারণে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং উপজেলায় ৩০ ডিসেম্বরের আদলে নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন- প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে আপনি একমত কিনা- জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন। তার (সিইসি) সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশের সুযোগ কোথায়? জাতীয় নির্বাচন যেভাবে হয়েছে উপজেলা নির্বাচনও সেভাবেই সিডিউল অনুযায়ী হবে। এতে দ্বিমত প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই।
শেষপর্যন্ত বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিলে আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উন্মুক্ত-ই যদি করব তাহলে এত আয়োজন করে মনোনয়ন ফরম বিতরণ কেন? তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনের আগপর্যন্ত আপনারা বলতে পারেন না কে অংশ নেবে আর কে নেবে না? শেষ মুহূর্তেও অনেকে সিদ্ধান্ত বদল করতে পারে। তাই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
এছাড়া বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও তাদের অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শুরুতে শুধু তৃণমূল থেকে পাঠানো নামের ব্যক্তিদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রির কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করেছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন ফরম সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। তাহলে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব কী প্রকাশ্য রূপ নিল? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনই সেটা বলার সময় আসেনি। কারণ এটা বিদ্বেষপ্রসূত কোনো দ্বন্দ্ব নয়। খুব স্বাভাবিক কারণেই দলের ভেতরে সুস্থ একটা প্রতিযোগিতা হতেই পারে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকতে হবে। তারপর দ্বন্দ্ব কিনা সেটা বলা যাবে।
অনেক উপজেলায় প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নিজেদের লোক এমনকি আত্মীয়স্বজনদের নাম পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে- এক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা কী হবে? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মনোনয়নপত্র খতিয়ে দেখব। এখানে কে কার ভাই বা বোন এসব কোনো প্রশ্ন নয়। জনগণের কাছে কার জনপ্রিয়তা কতটুকু, কে উইনেবল, কে ইলেকটেবল- সেটা আমরা খতিয়ে দেখব।
তিনি আরও বলেন, আমরা উপজেলায় একটি বর্ধিত সভায় নাম নির্ধারণের জন্য বলেছিলাম। ওই বর্ধিত সভায় যদি কোনো আত্মীয়ের নাম চলে আসে তাহলে তো কিছু করার নেই। আত্মীয় পরিচয়ের কারণে কারও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চাপা পড়ে যাবে- সেটা তো হতে পারে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোহবান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ।
কালের কাগজ/প্রতিবেদক/জা.উ.ভি