মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ৭ এপ্রিল-২০২২,বৃহস্পতিবার।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ১৯৭১ সনে আমাদের গড় জমি ছিলো ২৮ শতাংশ এখন তা দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশ। আগের খাদ্য ঘাটতি ছিলো। এখন দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই। এসব সম্ভব হয়েছে আমাদের বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাগ-বানিয়াজুরী এলাকায় ব্রি ধান ৯২ জাতের বীজ উৎপাদনকারী কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বিএনপির শাসন আমলের সাথে তুলনা করে বলেন, বিএনপির শাসন আমলে তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে শত শত মানুষ না খেয়ে মারা গেছে মঙ্গার কারনে। আর বর্তমান সরকারের (১৩ বছর) আমলে একজন মানুষ না খেয়ে মারা গেছে, যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্ব¡ ছেড়ে দেব।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি কৃষির উন্নয়ন করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ একটি উন্নয়ত দেশ হবে। কারন কৃষির উপর দাড়িয়ে সকল উন্নয়ন হবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা চাকরী-বাকরী করবে তাদের জীবনে এতো কষ্ট করতে হবে না।
তিনি আরো বলেন, বোরো আমাদের মূল ফসল। আমাদের মূল খাদ্য চাল। এই চালের বেশি উৎপাদন হয় বোরো থেকে। প্রায় ২ কোটি টনের মত বোরো আমরা উৎপাদন করি। আমরা অনেকগুলো নতুন জাত উদ্ভাবন করেছি। যেগুলোর উৎপাদনশীলতা আগের অন্য জাতের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা চাচ্ছি এসব জাত যত দ্রæত মাঠে নেওয়া যাবে ততই আমরা লাভবান হব। এই ব্রিধান ৯২ প্রতি শতকে ১ মণ করে ধান হয়। আগে যেখানে বিঘাতে ৫/৭ মন ধান হতো এখন এই নতুন জাতে প্রায় ৩৩ মনের মত ধান পাবে কৃষক ভাইয়েরা।
কৃষি মন্ত্রী আরো বলেন বাংলাদেশে যদি কৃষি না হয়, তাহলে দেশ টিকে থাকবে না। এই যে ইউক্রেনে যুদ্ধের হইতেছে, ইউক্রেন থেকে এখন আর গম আসতেছে না। তারাই গম সরবরাহ করে। রাশিয়া থেকে গম আসতেছেনা। ইতিমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষের হাত ছানি। কাজেই কৃষিতে সয়ংসম্পূর্ণ থাকতে হবে।
কৃষি মস্ত্রী আরো বলেন ভোজ্য তেলের প্রতি বছর ২৪ হাজার কোটি টাকা আমাদের খরচ করতে শুধু তেল আমদানী করার জন্য। এই ইউক্রেনের যুদ্ধ আর করোনার কারনে তেলের দাম এখন বেশি। কারন বিদেশ থেকে এখন তেল আসতেছে না। যে তেল ছিল ৬শ ডলার টন, সেই তেল এখন ২ হাজার টন হয়েছে। এছাড়া জাহাজের ভাড়া বেড়েছে।
আলোচনা সভায় কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব মো.সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.বেনজীর আলম, ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডক্টর শাহজাহান কবির ,জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খাঁন , জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মো.এনায়েত উল্লাহসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে পেপে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।