Logo
ব্রেকিং :
বঙ্গবন্ধু শুরুর সময়, একটি ডলারও ছিল না- মানিকগঞ্জে গৃহায়ন মন্ত্রী রাণীশংকৈলে প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভা  নবাবগঞ্জে প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী-২০২৪ উদ্বোধনী /সমাপনী অনুষ্ঠান সমাজসেবার বিশেষ অবদানে সম্মাননা স্মারক পেলেন দৌলতদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান রহমান মন্ডল ভিক্ষা ছেড়ে  বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ চাহিদা সম্পর্ণ রতনদের পাশে প্রশাসন। টাঙ্গাইল শহরে থমথমে অবস্থা ॥ ককটেল বিস্ফোরণ আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ পুলিশি বাঁধায় পন্ড  দৌলতপুরে প্রাণি সম্পদ প্রদর্শণী নাগরপুরে প্রাণীসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী  অনুষ্ঠিত  ঘুমন্ত স্বামীর গোপণাঙ্গ কেটে সন্তান রেখেই পালালেন স্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

সিরাজগঞ্জে ৫০ হাজার  টাকার  জন্য অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যা ৫ বছর পর ৩ আসামি গ্রেফতার 

রিপোর্টার / ১৪১ বার
আপডেট মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩

এইচএম মোকাদ্দেস ,   সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :৩০ মে-২০২৩,মঙ্গলবার।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে  ৫০ হাজার  টাকার  জন্য বিউটি খাতুন নামের এক  অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যার দীর্ঘ ৫ বছর পর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)। নিহত বিউটি খাতুন (২৫) জেলার এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ গ্রামের সাচ্চু মিয়ার মেয়ে।  এ হত্যার ঘটনায় সাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৪ মে এনায়েতপুর থানায় অজ্ঞাত নামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  গ্রেফতাকৃতরা হলেন- এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণগ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে স্বপন ব্যাপারী (৩৭), মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মমিন (৫৫), মমিনের স্ত্রী আনু বেগম (৪০) এবং ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকা থেকে আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ওমর ফারুককে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।  প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ১৩ মে রাতে বিউটি খাতুন তার নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পরে। এসময় বিউটির মা কোমেলা খাতুন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে দেখেন তার মেয়ের ঘরের দরজা খোলা। সেই সময় বিউটিকে নাম ধরে ডাকলে বিউটি কোন সাড়া-শব্দ না করলে কাছে গিয়ে শরীরে হাত দিয়ে ডাকাডাকি করে। তাতে সাড়া না দেয়ায় চিৎকার দিলে বিউটির পরিবারের সদস্যরা ঘরের আলো জ্বালিয়ে দেখতে পায় বিউটি মৃত অবস্থায় পরে আছে। পরে পরিবারের লোকজনের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠায়। পরে বিউটির বাবা সাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় অজ্ঞাত নামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ পিবিআই তদন্ত করে। তদন্তের প্রায় ২ বছর পরে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।  পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা এর নির্দেশে সিরাজগঞ্জ পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে। দীর্ঘদিন তদন্তের এক পর্যায়ে গত ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকা থেকে আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ বছরের ২৩ ও ২৫ মে রাতে সন্দহমূলকভাবে আরও তিন জনকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যার সাথে জড়িত থাকায় আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।  পুলিশ সুপার আরও জানান, ২০১৪ সালে এনায়েতপুরের কোচগাঁও গ্রামের আব্দুল্লাহের সাথে বিউটি খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ বছর পরে স্বামীর সঙ্গে তালাক হয়। বিউটি বাবার বাড়িতে থাকাবস্থায় প্রতিবেশী ওমর ফারুকের সঙ্গে মোবাইলে কথা হতো। এক পর্যায়ে ফারুকের প্রস্তাব না করে বিউটি। পরে বিউটির ছোট বোন আলোমতির স্বামীর পরিবারের সাথে ঝামেলা হয়। পরে বিউটির বাবা সাচ্চু মিয়া তাদের পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্বপন ব্যাপারী বিষয়টি সমাধান করার জন্য অনুরোধ করে। স্বপনের মাধ্যমে বিউটির ছোট বোন আলোমতির স্বামীর বাড়ীর সমস্যার সমাধান হওয়ায় বিউটির পরিবারের সাথে স্বপনের সু-সম্পর্ক তৈরি হয়। বিউটির ছোট খালা আন্না মাদক ব্যবসা করায় সে বিউটির মোবাইল দিয়ে স্বপনের সাথে মাঝে মধ্যে কথা বলতো।  অপর দিকে স্বপন মাদক সেবী হওয়ায় মাঝে মধ্যে স্বপন আন্নার বাড়ীতে যাওয়া আসা করতো এবং মাদক সেবন করতো। সেই সুবাদে বিউটির সাথে স্বপনের দেখা সাক্ষাৎ ও মোবাইলে কথাবার্তা হয়। এক পর্যায়ে স্বপন বিউটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করে। কিন্তু স্বপন সরাসরি বিউটিকে প্রস্তাব দিতে না পেরে আন্নাকে জানায়। পরবর্তীতে স্বপন আন্নার মাধ্যমে বিউটির সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। বিউটির ছোট খালা আন্নার মাধ্যমে আন্নার বাড়ীতে স্বপন নিয়মিত বিউটির সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে।  এভাবে চলতে থাকলে বিউটির বাবা সাচ্চু মিয়া স্বপনকে তার প্রতিবেশী ওমর ফারুক বিউটিকে ডিসটার্ব করে তাকে একটু শাসন করে দিতে হবে। স্বপন এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় সে ওমর ফারুককে শাসন করে। বিউটির সাথে স্বপনের অনুমান ২ মাস সম্পর্ক চলার পরে বিউটিকে বিয়ে করার জন্য স্বপনকে চাপ দেয়। স্বপন বিবাহিত হওয়ায় বিউটিকে বিয়ে করতে রাজি না হলে বিউটি স্বপনকে জানায় বিউটি অন্তঃসত্ত্বা।  পরবর্তীতে বিউটি স্বপনের উপর আরো বেশী চাপ সৃষ্টি করলে স্বপন কি করবে তা ভেবে না পেয়ে ঘটনার ১০/১২ দিন আগে প্রতিবেশী ওমর ফারুককে ডেকে বিষয়টি জানায়। স্বপন বিউটিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে এবং ওমর ফারুককে স্বপনের সাথে থাকতে বলে। কিন্তু ওমর ফারুক রাজি না হলে স্বপন ওমর ফারুককে ভয়- ভীতি দেখায়। স্বপন বিউটির সাথে ওমর ফারুকের পূর্বের সম্পর্কের বিষয় দিয়ে ব্লাকমেইল করে হত্যার পরিকল্পনায় সাথে নেয়।  পরে স্বপন বিউটির ছোট খালা আন্নার কাছে বিউটিকে হত্যা করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আন্না তার নিজের ভাগনিকে হত্যা করতে রাজী না হলে স্বপন তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে রাজী করায়। পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আন্নাকে দিতে চায়। তাৎক্ষনিক স্বপন ২০ হাজার ওমর ফারুক ৩০ হাজার টাকা দেয় আন্নাকে। তখন বিউটির ছোট খালা তার আপন মেজো বোন আনু বেগমকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিউটিকে হত্যা করতে সহায়তা করতে বলে। আনু বেগম তার স্বামী মোমিন এর সাথে কথা বলে তাকে রাজি করায়। তাদের পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৩ মে ২০১৮ সালে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বিউটিদের বাড়ির পাশে সবাই একত্র হয়। পরে স্বপন, ওমর ফারুক, আনু, আন্না ও মোমিন বিউটির ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থা হাত-পা ও মাথা চেপে ধরে মুখে বালিশ চাঁপা দিয়ে হত্যা করে কৌশলে পালিয়ে যায়।###


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com