শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:১০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নিজ জেলায় গান গেয়ে মাতিয়ে গেলেন জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী কনকচাঁপা ঘিওরে বৃদ্ধা লায়লার হত্যাকারী তার স্বামী: এসপি গত ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রামে খবর ছিলনা আওয়ামী এজেন্টরা এখন মাঠে নেমেছে— এস.এ জিন্নাহ কবির ঘিওরে গৃহবধূর গলা কাটা লাশ উদ্ধার দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলায় দুইজন গ্রেফতার তারেক রহমানের রাস্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে মাঠ চসে বেড়াচ্ছে এস. এ জিন্নাহ কবির দৌলতপুরে ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা দেশের গণতন্ত্র রক্ষা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রদলকে সজাগ থাকতে হবে …… সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সিরাজগঞ্জে জোড়া খুনের মামলায় ৪জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৮জনের যাবজ্জীবন যমুনা রেলসেতু দিয়ে দ্রুত গতিতে চলল পরীক্ষামুলক ট্রেন

পাবনায় দলীয় কোন্দলে বিএনপি নেতা হত্যার ঘটনায় মামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

প্রতিনিধির নাম:
  • আপডেট করা হয়েছে: সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১১৭ দেখা হয়েছে:

রিজভী রাইসুল ইসলাম,   পাবনা প্রতিনিধি :

পাবনায় দলীয় কোন্দলের জেরে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে মৎস্যজীবী দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জালাল উদ্দিন (৪০) নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে, জালাল হত্যার জেরে ওই এলাকার বেশকিছু বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হেমায়েতপুর ইউনিয়নে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। হত্যার দিন থেকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অন্তত ৫ থেকে ৭ টি বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় প্রাণের ভয়ে বাড়ি ছাড়া হামলার শিকার পরিবারগুলো। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, ‘নিহত জালালের ভাই লাবু হোসেন বাদী গতকাল রোববার রাতে মামলা করেছেন। এতে ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য মুন্তাজ আলির সঙ্গে একই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম পক্ষের। গত শুক্রবার রাতে এলাকার ইসলামি জলসা নিয়ে দুই পক্ষের বাকবিতন্ডা হয়। এরই জেরে শনিবার সকালে বেতেপাড়া এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে আবুল হাসেম অনুসারী জালালের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। এরপরই, শনিবার রাতে ও রবিবার দিনভর মন্তাজের অনুসারীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় হাসেমের লোকজন। মন্তাজ অনুসারীদের দাবি, হাসেমের অনুসারীরা হেমায়েতপুর মানসিক হাসপাতাল এলাকায় জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হাসান আলী, রেজাউল করিম, মোহাম্মাদ আলীর বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সরেজমিনে দেখা যায়, মামলা হামলা আতঙ্কে এসব বাড়ি পুরুষ শূন্য। দুএকটি ব্যতীত অধিকাংশ বাড়িতে পরিবারের নারী সদস্যরাও নেই। হামলার শিকার পরিবারগুলোর অভিযোগ, প্রায় শত লোকের একটি দুর্বৃত্তের দল বিভিন্ন সময় লোহার রড, চাপাতি, হাসুয়া ও বাঁশের লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িগুলোতে হামলা চালায়। এ সময় বাড়িতে থাকা গরু, ছাগল, মোটরসাইকেল, গহনা, টাকা পয়সা সহ আসবাবপত্রও লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর শেষে দেয়া হয় অগ্নিসংযোগ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাজনীতি বা হত্যার সাথে সম্পৃক্ত নন এমন অনেক পরিবারের ওপরও এ হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এখনো হুমকি ধাওয়া দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। অভিযোগ জানানোর পরেও প্রশাসন তাদের নিরপত্তা দিতে পারছে না বলেও জানান তারা। রেজাউল বলেন, আমি সাধারণ একজন ব্যবসায়ী। কোনো ধরণের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। আমার ছোটভাই বিএনপির ওদের (হামলাকারী) বিপরীত গ্রুপের রাজনীতি করে জন্য আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। লুটপাট ও ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এখনো নানাভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। একই হামলার শিকার পাবনা জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হাসান ও তার পরিবার। তিনি পলাতক থাকায় কথা হয় তার স্ত্রী সুমি খাতুনের সাথে। তিনি বলেন, হঠাৎ আমাদের বাড়ি খবর এলো শত শত লোক বাড়ি হামলা করতে আসছে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে হাশেমের নেতৃত্বে মানিক, আকাশ রিদ্দিক ও স্বপন সহ দলবল এসে ভাঙচুর শুরু করে দিলো। আমরা ঘর তালা দেবার সুযোগও পাইনি। ঘরে নগদ টাকা পয়সা ছিলো সে সবকিছু লুটে নিয়ে গেছে। এছাড়া মোটরসাইকেল ও গহনা সহ যা ছিলো সব লুট করে ককটেল মারলো এবং পরে পেট্রোল দিয়ে বাড়তে আগুন দিলো। আমাদের অবশিষ্ট কিচ্ছু রাখেনি। সব নিয়ে গেছে। এখনো হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, দুই গ্রুপই বিএনপি। যে গ্রুপের লোক মারা গেছে তার বিরুদ্ধ গ্রুপের বাড়িঘর তো হামলা হয়েছেই, এর সাথে রাজনীতি করে না বা নিরীহ কিছু লোকের বাড়িও লুটপাট করা হয়েছে। আশেপাশের এলাকাগুলোতেও প্রচন্ড আতঙ্ক বিরাজ করছে। যারা হত্যার সাথে জড়িত বা অপরাধী তাদের শাস্তি হোক, কিন্তু এভাবে সাধারণ পরিবারের ওপর হামলা করা উচিত না। চারিদিকে যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে চলাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ওই এলাকায় এখনো অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আর্টিকেলটি শেয়ার করুন:

এই ক্যাটাগরির আরো খবর
© All rights reserved ©
themesba-lates1749691102