চন্দন চক্রবর্তী ,স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোনা :1১৫ জুলাই-২০২৩,বৃহস্পতিবার।

নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের জামাতা নুরুন্নবী মোল্লা তার স্ত্রীর নামে উপজেলা সদর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার চেষ্টা করলে তিনি নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দ্বারা লাঞ্চিত করা, দেশের বিভিন্ন জেলায় মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদেরকে হয়রানি করে চলেছেন। তার হাত থেকে রেহাই পাননি স্থানীয় দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বনত্রিয়শ্রী গ্রামের দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুন্নবী মোল্লার মিথ্যা মামলায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হাজিরা দিতে থাকাবস্থায়, মৃত্যুবরণ করেছেন।
ফতেপুর ইউনিয়নের রামগোপালপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক মাখন চৌধুরী বলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার বাসিন্দা নুরুন্নবী মোল্লা আমাদের গ্রামের জামাতা। সে খুবই খারাপ প্রকৃতির একজন মানুষ। সে অল্পদিনের মধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কোটি কোটি টাকার জমি তার স্ত্রীর নামে খরিদ করে। আমাদের পাড়ার চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি জোরপূর্বক সে মাটি কেটে ভরাট করে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। যার ফলে মুসুল্লীসহ গ্রামের শিক্ষার্থীদের এখন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নুরুন্নবী মোল্লা পাড়াবাসীকে জিম্মি করার উদ্দেশ্যে ৩০৭ দাগে বিআরএস শ্রেনীতে উল্লেখকৃত রাস্তাটি গোপনে তার স্ত্রীর নামে ক্রয় করেছেন। মোল্লার রয়েছে এলাকায় একটি সন্ত্রাসী নিজস্ব লাঠিয়াল গ্রæপ। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার চেষ্টা করলে সে তার নিজস্ব বাহিনী তৈমুর চৌধুরী ও তার ছেলে রকি, সোহেলসহ লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি প্রর্দশনসহ মারধর করেন। পুলিশকে ম্যানেজ করে গ্রামের অনেককেই সে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি এবং সর্বশান্ত করেছেন। নুরুন্নবী মোল্লার বিরুদ্ধে রাজধানীর কতোয়ালী থানায় অবৈধ চোরাচালানীর একটি মামলা চলমান রয়েছে। ঢাকা কতোয়ালী থানার মামলা নং-৫/৪-৮-৪ তারিখ- ০৪/১১/২০১৯ ইং। নুরুন্নবী মোল্লার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার ব্যাপারে দুদকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজধীখানের বাসিন্দা নুরুন্নবী মোল্লা কি উদ্দেশ্যে মদনের আইনশৃংখলার বিঘœসৃষ্টি, স্ত্রীর নামে কোটি কোটি টাকা মুল্যের একের পর পর এক জমি খরিদ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছেন । তার বিশাল অট্রালিকায় প্রায়শই জামাত নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক অব্যাহত রাখায় গ্রামের অনেকেই আতংকগ্রস্থ। আমাদের পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের হাবুল মুন্সী, রতন মুন্সী ও ইব্রাহিম মুন্সী গ্রামের জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে নুরুন্নবী মোল্লার রোষানলে পড়ে ঢাকার আদালতে এখনো মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিচ্ছেন। এরআগে আমাদের বনত্রিয়শ্রী গ্রামের দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা খোকন দেশের বিভিন্ন জেলায় নুরুন্নবী মোল্লার রোষানলে পড়ে মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তার কারনে আমাদের গ্রামের অনেকেই এখন সর্বশান্ত।
এ ব্যাপারে মদন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ফতেপুর ইউনিয়নের জামাই নুরুন্নবী মোল্লার কারনে বনত্রিয়শ্রী গ্রামের দুইজন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা খোকন দেশের বিভিন্ন জেলায় মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে থাকাবস্থায় মারা গেছেন। অর্থের প্রভাবে বহিরাগত জমাতা নুরুন্নবী মোল্লা এলাকায় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক বির্তকিত কাজ করে চলেছেন। তার বিরুদ্ধে গ্রামের সম্মানিত লোকজনকে লাঞ্চিত করা, অপমান অপদস্থ করা, নিজস্ব মস্তান দিয়ে ভয়ভিিত প্রদর্শন, স্ত্রীর নামে একের পর এক জমি ক্রয়ের বিষয়গুলো আমি শুনেছি। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নুরুন্নবী মোল্লার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে অভিযুক্ত ফতেপুর ইউনিয়নের জামাতা নুরুন্নবী মোল্লার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।