Logo
ব্রেকিং :
নাগরপুরে রাজিবের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন মানুষের পাকা রাস্তার চাহিদা বেড়েছে,কাঁচা রাস্তায় মানুষ চলতে চায়না -রাণীশংকৈলে এমপি হাফিজ  গোয়ালন্দে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন টাঙ্গাইলের মধুপুরে বারোয়ারী মন্দিরে অগ্নিকান্ড পাল্টাপাল্টি অভিযোগ! অসুস্থতার ছুটি নিয়ে স্বামীর নির্বাচনী প্রচারণায় স্কুল শিক্ষিকা নগরকান্দায় গভীর রাতে আগুনে পুড়লো ৪ টি দোকান সিরাজগঞ্জে বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত ফরিদপুরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত নাগরপুরে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৃত্যু শয্যায় টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পথচারী, রিক্সাচালকদের মাঝে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ
নোটিসঃ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : আলহাজ্ব এ.এম নাঈমূর রহমান দূর্জয় ,সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জালাল উদ্দিন ভিকু,সহ-মফস্বল সম্পাদক মো: জাহিদ হাসান হৃদয়

নেত্রকোনায় এক বছরের অধিক তালাবদ্ধ জেলা বিএনপি অফিস

রিপোর্টার / ১৩৬ বার
আপডেট সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

চন্দন চক্রবর্তী, স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোনা :০৮ মে-২০২৩,সোমবার।

নেত্রকোনায় জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সাংগঠনিক অবস্থা দিন দিন ঝিমিয়ে পড়েছে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষনায় জেলা বিএনপির রাজনীতির হালচাল নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা চলছে। জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে এক বছরের অধিক সময় তালাবদ্ধ। অচিরেই মেয়াদউত্তীর্ন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের জন্য নেতাকর্মীরা জোর দাবী করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩-১৪ মাস ধরে অস্তিত্ব সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে দলের কর্মসূচীগুলো। জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয় এক বছরের অধিক সময় ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় এবং প্রধান কার্যালয়ের সামনের সাইনবোর্ডটুকো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ৩ মাস মেয়াদী জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির গত ৫ বছর অতিবাহিত হলেও সম্মেলনের মাধ্যমে পুনাঙ্গ কমিটি এখনো গঠন করতে পাড়েনি। জেলা শহরের আধুনিক সদর হাসপাতাল রোডস্থ জেলা বিএনপির আহবায়কের বাসভবনের নীচতলায় রাজনৈতিক কার্যালয়ে নামেমাত্র কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে ঢিমেতালে চলছে জেলা বিএনপির একটি গ্রæপের কর্মসূচীগুলো। অন্যদিকে জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টগুলো থেকে দুই বছরের অধিক সময় ধরে জেলা বিএনপির বিগত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র নমীনি ও জেলা যুবদলের ১নং সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনির নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীও সকল বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করেই অংশগ্রহন করছেন। জেলা শহরের রাজপথে বিএনপির ঝটিকা আন্দোলনের নেতা মামুন খান রনিকে জেলা বিএনপির শীর্ষপদে দেখতে চায় তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও জেলার বারহাট্রা, আটপাড়া, কেন্দুয়া উপজেলাসহ জেলা বিএনপির বেশ কয়েকটি ইউনিট কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীন কোন্দাল বিরাজ করছে। আহবায়ক এবং সদস্য সচিব উভয়েই এলাকাবিমুখ। জেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয় তালাবন্ধ থাকায় সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও হতাশাগ্রস্থ।
জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল গাফফার ঠাকুর তুলন বলেন, জেলা শহরে ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিকে চাঙ্গা করে তোলেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি। জেলা যুবদলের ১নং সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকা সত্তে¡ও সে বর্তমানে বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। ২০২১ সালের ১৪ই ফেব্রæয়ারী অনুষ্ঠেয় নেত্রকোনা পৌরসভা নির্বাচনে জেলা বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতিকে আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি আ’লীগ প্রার্থীর সাথে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। সে সময় সকল দলীয় নেতাকর্মীদেরকে একত্রিত করে তিনি নির্বাচনের মাঠ বেশ জমিয়ে তোলেন। চলতি বছরের ১৯ জুলাই তারেক রহমানকে নিয়ে বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক জেলা শহরে রনির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল করেছে। যে মিছিল কি না নেত্রকোনাবাসী দীর্ঘ ২৩ বছর পর অবলোকন করে। গত পহেলা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ মামলায় প্রধান আসামী করা হয় আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনিকে এবং পরবর্তীতে গাজীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নেত্রকোনায় আনা হয়। আন্দোলনে নেতৃর্ত্বের কারনে রনির নামে প্রায় ৩৬-৩৭টি মামলা হয়েছে। জেলার নেতৃত্বে রনির মতো সাহসী নেতৃত্ব থাকলে দলের কর্মীরা রাজপথে আন্দোলন করতে সাহস পাবে। দ্রæত সময়ের মধ্যে দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডও গতিশীল হবে।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ জাহিদুল আলম বলেন, বিগত ২০১৮ সালে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ডা. মো. আনোয়ারুল হককে আহবায়ক এবং কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীকে সদস্য সচিব করে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অনুমোদন করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটি। জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল হক বিগত নির্বাচনে দলের প্রতিক পাওয়ার পরও মাঠে নামতে সাহস করেননি। জাতীয় নির্বাচনে মাইকিং-পোস্টার, ব্যানার পর্যন্ত তিনি টানাতে ব্যর্থ। পরবর্তীতে জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব উভয়েই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন খানকে সঙ্গে নিয়ে জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে দলীয় কর্মসূচীগুলো আমরা পালন করছিলাম। ওই সময়ে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান এবং বিএনপির মেয়র নমিনী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনির নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ছিল বেশ চোখে পড়ার মত। জেলা শহরের ছোটবাজরস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ২০২২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারীর প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার পূর্বমূহুতে জেলা বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি গ্রæপের কর্মীদের সাথে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস.এম মনিরুজ্জামান দুদুর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর থেকে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয় বিমূখ হয়ে পড়েছেন। দলের প্রধান কার্যালরের পরিবর্তে শহরের হাসপাতাল সড়কে ও শহরের কুড়পার এলাকার মাস্টারবাড়ি রোডে নামেমাত্র কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে জেলা বিএনপি। নেত্রকোনা জেলা বিএনপির মেয়াদউত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে দ্রæত সম্মেলনের মাধ্যমে শহীদ জিয়াউর রহমাানের আদর্শের পরীক্ষিত সৈনিক দুঃসময়ের কান্ডারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খানকে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত করার লক্ষ্যে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন খান মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮১ সালে নেত্রকোনায় প্রথম জেলা পরিষদে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯৭ সালে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সভাপতি, ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে ১৫২৫ ভোটের মধ্যে ১১৬৮ ভোট পেয়ে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালের বাতিল হওয়া জাতীয় সংসদ এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান সদর আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। জেলা বিএনপির দুঃসময়ে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিকের ভুমিকা রেখেছেন তিনি। এজন্য নেত্রকোনার রাজপথে বীরমুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খানকে মাথার রক্ত ঝরাতে হয়েছে।
জেলা বিএনপির আসন্ন ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল হক, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা এটিএম আব্দুল বারি ড্যানি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান নুরু, জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান তালুকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবু তাহের তালুকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ড. আরিফা জেসমিন নাহীন, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন খান টিটোসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জেলা কৃষকদলের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা সালাউদ্দিন খান মিলকী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা এস. এম শফিকুল কাদের সুজা, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এস. এম মনিরুজ্জামান দুদু, জেলা যুবদলের সভাপতি মশিউর রহমান মশু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন পরিছন্ন ইমেজের নেতা। প্রার্থীরা ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। আসন্ন ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে কে আসছেন নতুনভাবে নেতৃত্বে এনিয়ে সর্বত্রই জোর আলোচনা শোনা যাচ্ছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল হক এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, জেলা প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পরও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের একাধিকবার হামলার কারনে ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে কিছুদিন ধরে আমরা বড় কোন সভা সমাবেশ করতে পাড়ছিনা। আমাদের নেতা কর্মীদের নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলা এবং পুলিশের হয়রানি চলমান রয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। সাংগঠনিকভাবে দলের অভ্যন্তরে নেতৃর্ত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে। বাকী কয়েকটি উপজেলা বিএনপির সম্মেলন দ্রæত সম্পন্ন করে পরবর্তীতে জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। অচিরেই দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে কিছু সংস্কারের কাজ দ্রæত সম্পন্ন করে সকল অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচী দলীয় কার্যালয়ে পালন করা হবে।


এ জাতীয় আরো খবর
Tech Support By Nagorikit.Com